Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অনলাইনে নিরাপদ থাকার গোপন টিপস

onlinesafety

অনলাইনে শতভাগ নিরাপদ থাকা প্রায় অসম্ভব। সম্প্রতি হলিউডের নামী তারকাদের নগ্ন ছবি প্রকাশের পর এ ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়েছে। অনলাইনে তথ্য সুরক্ষিত রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে অ্যাপল ও মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, তা সত্ত্বেও এ নিয়ে উদ্বেগ আছে প্রত্যেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর।

chardike-ad

ক্রেডিট কার্ড নম্বর ও ব্যক্তিগত তথ্যের মতো প্রত্যেক ব্যবহারকারীর কাছে তার একান্ত ছবিগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। এসব সবাই গোপন রাখতেই চায়। কেননা, কোনভাবে যদি তা হ্যাকারদের হাতে যায়, তবে যে কেউ এতে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

সিকিউরিটি সফটওয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি ও ওয়াশিংটনের একটি বুদ্ধিবাদ চর্চা কেন্দ্রের জরিপ অনুযায়ী, অনলাইনে ২০১৩ সালে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ৪০ মিলিয়ন মানুষের তথ্য চুরির ঘটনা ঘটে। এছাড়া, তুরস্কের ৫৪ মিলিয়ন, কোরিয়ার ২০ মিলিয়ন, জার্মানির ১৬ মিলিয়ন ও চীনের ২০ মিলিয়ন মানুষের অনলাইনের তথ্য চুরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতেও অনলাইনে শতভাগ নিরাপদ থাকা সম্ভব, এ সম্পর্কে সাহায্য করবে নিম্নোক্ত টিপস গুলো-

বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন, তারা অনলাইনে ব্যক্তিগত বা গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্টোর করেননি। এ বিষয়টি একেবারেই ঠিক নয়। কেননা, বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা অনলাইনে নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি, সেটা স্টোর রয়ে যায়।

তথ্য নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ব্যবহারকারীর ডিভাইসটির সেটিংস চেক করা। ব্যবহৃত ডিভাইসে ডাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপে থাকছে কিনা এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা আপলোড বন্ধ হচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল করতে হবে।

ব্যবহৃত ডিভাইস এবং অনলাইন সেবার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড খুব জরুরী। অনলাইনে তথ্য হারানো ব্যক্তিদের বেশিরভাগই তাদের পাসওয়ার্ড ব্যবহারের দিকে সচেতন ছিলেন না। একটি ভালো বা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ কম্পিউটার সিকিউরিটি এক্সপার্টদের মতে, জটিল হওয়ার চেয়ে পাসওয়ার্ডটি কত ওয়ার্ডের সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, একটি ১৬ ওয়ার্ডের পাসওয়ার্ডের চেয়ে ৮ ওয়ার্ডের পাসওয়ার্ড মনে রাখা সহজ। কিন্তু ১৬ ওয়ার্ডের পাসওয়ার্ড অনেক বেশি জটিল হয়ে থাকে ৮ ওয়ার্ড থেকে। বেশি ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড হাতানোটা সনাক্তকারী সফটওয়্যারের জন্য বেশি সময় সাপেক্ষ ও অনেক ক্ষেত্রে দুঃসাধ্য।

একটি জরিপে দেখা গেছে, ৮ ক্যারেক্টারের একটি পাসওয়ার্ডের বিশ্লেষণে ২২ শতাংশ ক্ষেত্রে ১০ বিলিয়ন ধারণাসূচক পাসওয়ার্ড পাওয়া যায়। যেখান থেকে সঠিক পাসওয়ার্ডটি নিচ্ছে হ্যাকাররা। ১৬ ক্যারেক্টারের একটি পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১২ শতাংশ।

পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে একটি বিষয় এড়িয়ে চলা উচিৎ। তা হলো একটি ক্যারেক্টারের বদলে মিল রয়েছে এমন শব্দের ব্যবহার না করা। যেমন, ইংরেজি ও ওয়ার্ডর ক্ষেত্রে ১ ব্যবহার। এমন পাসওয়ার্ড হওয়া উচিৎ যাতে ব্যবহৃত শব্দগুলো ইংরেজি লেটার ও নম্বরের এলোমেলো সংমিশ্রণ। যা কোন অর্থ প্রকাশ করে না।

হ্যাকারদের জন্য সবচে বড় সুবিধা হলো ‘ফরগট মাই পাসওয়ার্ড সার্ভিসটি’। এর ফলে কারো অ্যাকাউন্ট হ্যাকের আগে শুধু ইউজার নেইম ও কিছু সাধারণ তথ্য জানলেই চলে। বাকিটা যে প্রতিষ্ঠানের সেবা তারাই করে দেবে।

একবার অসাবধানবসত পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের হাতে চলে গেলে তা পরিবর্তনের পরও ই-মেইল অ্যাকাউন্ট শতভাগ নিরাপদ হয়ে উঠে না। হতে পারে আপনি একটি অনিরাপদ ওয়াইফাই কানেকশন ব্যবহার করছেন। এর মাধ্যমে ই-মেইল চেকিং বা ডাটা আপলোড করছেন। এমন পরিস্থিতিতেও পাসওয়ার্ড চুরির সম্ভাবনা থাকে। অনিরাপদ ওয়াইফাই কানেকশনে এসব সেবা ব্যবহার বা ডাটা ট্রান্সফার এড়িয়ে চলা উচিৎ। এক্ষেত্রে বাড়িতে নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার বা ডিভাইসে ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক অ্যাপ (ভিপিএন) ইনস্টল করে তথ্য নিরাপদ রাখা যায়। অনিরাপদ ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় অ্যাপটি অন করে ই-মেইল বা ডাটা ট্রান্সফার করলে তা অন্য কারো পক্ষে পড়া কষ্টকর।

এখানেই শেষে নয়। এরপরও আপনার তথ্য চুরির ঘটনা ঘটতে পারে। অনলাইনে তথ্য নিরাপদ রাখতে হলে বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন। এত কিছুর পর আপনার তথ্য শতভাগ নিরাপদ না হলেও হ্যাক করাটা সাইবার অপরাধীদের জন্য কষ্টকর হবে।

এছাড়া, বেশ কিছু ই-মেইল ও কিছু ডিভাইসে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা হয়েছে। এর সাহায্য গ্রহণ করা যেতে পারে।