Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে মানুষ

cold

শীতের তীব্রতায় কাঁপছে মাগুরার মানুষ। রাতে বৃষ্টির মতো শিশির ঝরছে। সূর্যের দেখা মিলছে না। গরিব মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। মানুষজন ছুটছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। বহু স্থানে ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা।

chardike-ad

মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলায় দুই দিন ধরে ঠিকমতো সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে গরম কাপড়ের অভাবে ঠান্ডায় কাঁপছে উপজেলার দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষ। তারা আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছে। তিনটি উপজেলায় সরকারিভাবে এ পর্যন্ত কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি।

গ্রামাঞ্চলে শিশুদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। মানুষজনকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া গত দুই দিনে মাগুরা সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও প্রচণ্ড কুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। ঠান্ডা বাতাস আর সূর্যের দেখা না পাওয়ায় হাড়কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। অসহায় দরিদ্র ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা শীত দুর্ভোগে পড়েছে। দরিদ্র শীতার্ত মানুষেরা সন্ধ্যায় ও সকালে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

জেঁকে বসা তীব্র শীতের কারণে লেপ-তোশকের দোকানের পাশাপাশি মার্কেটগুলোতে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত ক্রেতারা। আর নিম্নমধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষেরা যাচ্ছেন ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা কম দামের শীতবস্ত্র বিক্রেতাদের কাছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার কাপড়ের দাম বেশি বলে জানালেন ক্রেতারা।

এলাকার অনেকে জানান, গত শনিবার ও রোববার দিনভর মুখ দেখা যায়নি। মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর পাড়ে জেলেপাড়া গ্রাম। আজ সোমবার সকালে ওই গ্রামে সকাল গিয়ে দেখা যায়, দরিদ্র মানুষ অনেক স্থানে আগুন জ্বালিয়ে নিজেদের শীত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। গরম কাপড়ের অভাবে ওই গ্রামে অন্তত আড়াই হাজার মানুষ কষ্টে আছে।

এ সময় রহিমা বেগম বলেন, ‘নদীর বাতাস খালি হড়হড় করে এসে ঘরে ঢোকে। গায়ে দেওয়ার একটা মোটা কাপড়ও নাই বাবা।’

একই গ্রামের সাবিনা বেগম (৩২) বলেন, ‘রাতে কয়দিন থেকে ঘরে বরপের মোতো ঠান্ডা পানি পড়ছে। ঠান্ডায় হাত-পা কোঁকড়া লাগে।’

উপজেলার গোপালনগর রুইজানি গ্রামের শাহনাজ বেগম (৬৫) কাঁপতে কাঁপতে বলেন, ‘মরণের ঠান্ডা শুরু হইছে। কয়দিন থেকে রইদো নাই। এমন কয়দিন থাকবে ?’

রায়পাশা গ্রামের মালেকা বেগমা (৫০) বলেন, ‘ গরিবের জন্য গরমে ভালো। পাতলা ছিঁড়া কাপড় গায়ে দিয়া থাকা যায়। ঠান্ডায় মোটা কাপড় নাই। ছাওয়াল-মেয়ে নিয়ে কষ্টো করে বেঁচে আছি। আমাদের মেম্বার-চেয়ারম্যানরা দেখে না।’

পোয়াইল গ্রামের মাজেদা বেগম (৫৫) বলেন, ‘হাত-পা টাটানি ঠান্ডা শুরু হইছে। সহ্য করা যাচ্ছে না। যতদিন যাচ্ছে, ঠান্ডাও বাড়ছে।’

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান  জানান, উপজেলায় এ পর্যন্ত সরকারিভাবে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু হয়নি। কম্বল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। শীতে অসহায় মানুষকে রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালীদেরও এগিয়ে আসা দরকার।