Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডাবল লাইন হচ্ছে আগামীবছরই

railwayঢাকা-চট্টগ্রাম ৩২১ কিলোমিটার রেলপথ পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন হচ্ছে। এর মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার আগামী বছরের মধ্যেই ডাবল লাইনে উন্নীত হবে। অবশিষ্ট ৭১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এখন পুরো রেলপথ ডুয়েল গেজে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তা চায় রেলওয়ে। কারিগরি সহায়তা চেয়ে এরই মধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে সংস্থাটিকে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের টঙ্গী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পুরো অংশ মিটার গেজ। কিন্তু আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি, ট্রান্সএশিয়ান রেল নেটওয়ার্ক ও সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনভুক্ত (সাসেক) হওয়ায় এ রেলপথ ডাবল লাইনের পাশাপাশি ডুয়েল গেজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া নতুন করে আর মিটার গেজ রেলপথ নির্মাণ না করার নির্দেশ দেন তিনি।

chardike-ad

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া-লাকসাম ৭১ কিলোমিটার অংশে এরই মধ্যে ডাবল লাইনের পাশাপাশি ডুয়েল গেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাঠানো হয়েছে। এতে অর্থায়ন করছে এডিবি ও ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি)। ঢাকার কমলাপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন রেলপথ রয়েছে। ফলে কমলাপুর-টঙ্গী ও আখাউড়া-লাকসাম অংশ বাদে অবশিষ্ট ২২৫ কিলোমিটার ডুয়েল গেজে রূপান্তর করতে হবে।

এতে নতুন করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য ১ কোটি ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা কারিগরি সহায়তা দেয়ার জন্য এডিবিকে অনুরোধ করতে সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কাছে চিঠি পাঠায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এডিবিকে চিঠি দিয়েছে ইআরডি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. তাফাজ্জল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশের মিটার গেজ রেলপথ ডুয়েল গেজে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথমেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ডুয়েল গেজ করা হবে। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এডিবির সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ট্রান্সএশিয়ান ও সাসেক রেল রুটভুক্ত হওয়ার  সম্ভাবনা থাকায় প্রকল্পটিতে সংস্থাটির সহায়তা পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে এডিবির কারিগরি সহায়তার আওতায় চলছে সাতটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন। এর মধ্যে আখাউড়া-লাকসাম অংশটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর সাবরিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হচ্ছে ১০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চলমান প্রকল্পটির পরামর্শক চুক্তিপত্র সংশোধন করেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ডুয়েল গেজের সম্ভাব্যতা যাচাই দ্রুত সম্পাদন করা যেতে পারে। এজন্য প্রকল্পটি সম্প্রসারণ করে টিপিপি সংশোধন করলেই চলবে। সংশোধিত টিপিপি অনুমোদনের পরে পরামর্শক চুক্তিপত্র ভেরিয়েশনের মাধ্যমে দ্রুত সম্ভাব্যতা যাচাই, বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন এবং টেন্ডারিং কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে। এতে প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করে বিনিয়োগ প্রস্তাব বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠানো যাবে।

জানা গেছে, ২২৫ কিলোমিটার মিটার গেজ ডাবল লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরের জন্য দুই অংশে কাজ করতে হবে। প্রথম অংশে টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার ৬২ কিলোমিটার এবং অন্য অংশে লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা, ফৌজদারহাট হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডুয়েল গেজে রূপান্তরে জমি অধিগ্রহণের জটিলতা থাকছে না। কারণ রেলপথটি ডাবল লাইন করার সময় ডুয়েল গেজের প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ আগেই করা হয়েছে। এমনকি মাটি উন্নয়নের কাজও (আর্থ ওয়ার্ক) করে রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি সেতু ডুয়েল গেজ স্ট্যান্ডার্ডের করা হয়েছে। শুধু ডুয়েল গেজ স্লিপার ও রেলপাত বসাতে হবে। তবে বিদ্যমান রেলপথটি উন্নয়নে কিছুটা ব্যয় বেশি হবে।

এ প্রসঙ্গে মো. তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল লাইন নির্মাণের সময় ডুয়েল গেজের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। এখন শুধু লাইনটি ডুয়েল গেজ করতে হবে। পাশাপাশি পুরনো সেতুগুলো ভেঙে ডুয়েল গেজে নির্মাণ করতে হবে। তবে ডাবল লাইনের সময় নির্মাণ করা সেতুগুলো এরই মধ্যে ডুয়েল গেজের ব্যবস্থা থাকায় সেতুগুলোর কোনো ধরনের সংস্কার করতে হবে না। বণিকবার্তা।