Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফেসবুক থেকে আয়! ২য় পর্ব

facebook-earn

‘ফেসবুক থেকে আয়’ শিরোনাম আর্টিকেলের প্রথম পর্বে আমরা এফ-কমার্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেস্টা করেছি। আজ এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তো আর দেরি কেন চলুন শুরু করা যাকঃ

chardike-ad

শুরুতেই জেনে নেই এফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে কি?
কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তাঁদের পণ্য বিক্রির উদ্দেশে অনলাইন মার্কেটিং করাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।
আরো সহজ ভাষায় বললে, অনলাইন মার্কেটপ্লেসের কোনো প্রোডাক্ট আপনি প্রোমোট করবেন, বিক্রি হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন, এটাই এফিলিয়েট মার্কেটিং।

আর ফেসবুককে ব্যাবহার করে এফিলিয়েটে মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সহজেই ভালোমানের আয় করা সম্ভব। এফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনাকে কোন প্রকার বিনিয়োগ করতে হবে না। শুধুমাত্র নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে পারলেই কমিশন পেতে থাকবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?
আপানি যদি কোন কম্পানির এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তবে তার আগেই আপনাকে ঐ কম্পানির পার্মিশন/অনুমতি নিতে হবে । অনুমতি মানে আপনি যে ওদের এফিলিয়েট করছেন সেটা হিসেবের মধ্যে থাকতে হবে, নাহলে কিভাবে বুঝা যাবে যে আপনি এফিলিয়েশন করছেন।

অনুমতি মিললে ওরা আপনাকে একটা বিশেষ ভাবে গঠিত লিংক দিবে যাতে করে কেউ ঐ লিংকে ক্লিক করলে বা ঐ লিঙ্কে গিয়ে প্রোডাক্ট কিনলে তার লভ্যাংশ আপানার হিসেবে জমা হয় । এখন প্রাপ্ত বিশেষ লিংক সহ সংশ্লিষ্ঠ পন্যের প্রচার করা আপনার কাজ , যত বেশি প্রচার করবেন তত বশি সেল হবে তার মানে তত বেশি আয় ।

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ধরনঃ
পে-পার-সেল :- বিক্রয় হলে তবেই টাকা পাবেন ।
পে-পার-লোড :- বিক্রয় না হলেও ভিজিটর যদি কোন ফর্ম পূরন করে বা অন্য কোন কিছু করে তাতেই হবে ।
ড্রাইভিং ভিজিটর :- বিক্রয় বা কোন কাজ না করলেও শুধু ভিজিটর ভিজিট করলেই হবে, তবে এই পদ্ধতিতে দূর্নীতি হয় তাই খুব বেশি প্রচলিত নয় ।

 

কিভাবে ফেসবুকে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সফল ভাবে আয় করবেনঃ

১। ফেসবুকে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে জনপ্রিয় একটা ফেসবুক পেজ। পাশাপাশি  নিজস্ব কিছু  ফেসবুক গ্রুপ থাকলে আরো ভালো হয়। কিভাবে ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হয় সে ব্যাপারে আগের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। জানা না থাকলে দেখে নিতে পারেনঃ ফেসবুক থেকে আয়! ১ম পর্ব

২। যেসব ইকমার্স সাইটে এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম চালু আছে সেসব সাইটে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে সাইন-আপ বা রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন।

এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম চালু আছে এমন কিছু সাইট- # amazon.com, # ebay.com, # clickbank.com

প্রশ্ন হতে পারে কয়টি সাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল উত্তর হল আপনি যেই কয়টি সাইট এর এফিলিয়েশন প্রগ্রামে অংশ নিতে চান, সেই কয়টিতেই আপনি রেজিস্ট্রেশন করবেন। তবে খুব বেশি সাইট টার্গেট না করাই ভালো।

আপনি যদি মনে করেন আমি একটি নির্দিস্ট ক্যাটাগরীর পন্য নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করব। সেক্ষেত্রে আপনি ঐ ক্যাটাগরীর পন্য যেসব সাইটে আছে সব কয়টিতে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। আবার যদি মনে করেন যে আমি একটি নির্দিস্ট ইকমার্স সাইটের পন্য নিয়ে কাজ করব সেক্ষেত্রে একটি সাইটেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। রেজিস্ট্রেশন করার আগে আপনি সেসব সাইটে উল্লেখিত নিয়ম কানুন বা টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলো ভাল করে পড়ে নিতে পারেন। যেমনঃ # তাদের কুকি এর লাইফটাইম, # পেমেন্ট পদ্ধতি, # পেমেন্ট দেয়ার সময় সীমা, # অন্যান্য শর্ত বা বাধ্য-বাধকতা

৩। ইকমার্স সাইটে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনার প্রথম কাজ হবে পন্য নির্বাচন। আপনি যেই পন্য নিয়ে কাজ করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সেই পন্য নিয়েই কাজ করবেন। কারো কথায় প্ররোচিত বা প্রভাবিত হয়ে পন্য নির্বাচন করবেন না। (যদিও এক্ষেত্রে আপনার সাক্ষাৎ ”বিফলতা” নামক অধ্যায়ের সাথে হতে পারে তবে এই অভিজ্ঞতা আপনার পরবর্তী ক্যারিয়ার এর জন্য খুবই ভাল ফলাফল নিয়ে আসবে)। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের অনুসরন করতে পারেন কিন্তু কোন অবস্থাতেই অনুকরন করবেন না।

৪। পণ্য নির্বাচনের পর আপনি সেই পন্য সম্পর্কে খুটিনাটি সব কিছু জানার চেস্টা করবেন। যেমন এর নাম, মডেল, কোন দেশে তৈরী, এর সুবিধা বা ফিচার সমুহ, এর সীমাবদ্ধতা, গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি, এর ভালো দিক, মন্দ দিক। এবং এসব বিষয় খুব মনোযোগের সহিত নোট করে নিবেন। এর পাশাপাশি ইকমার্স সাইটে আপনার জন্য এফিলিয়েট কোড নিয়ে নিবেন।

৫। পণ্য সম্পর্কে সব কিছু জানার পর এর টাইটেল, মডেল নং, ডেসক্রিপশন, এফিলিয়েট লিঙ্ক, ছবি ইত্যাদি নিয়ে আপনার তৈরি করা সেই ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে ঐ পণ্যের একটি এড পোস্ট করে ফেলুন। পাশাপাশি ঐ পণ্য সম্পর্কে একটি রিভিউ লিখে ফেলুন এবং তা আপনার ফেসবুক পেজ সহ  সংশ্লিষ্ঠ আরো বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট  করতে থাকুন।

যেসব পেজ বা গ্রুপে আপনার পন্য সম্পর্কে আলোচনা না হয় বা হবার সম্ভাবনা নেই সেখানে আপনার লিঙ্ক না দেয়াই ভাল এবং বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন স্প্যামারদেরকে কেউই পছন্দ করে না। এমনকি গুগল ও না । সুতরাং ঠিক মত বুঝে শুনে মার্কেটিং করবেন। কপাল ভাল হলে কেউ গুগলে সার্চ দিলেও আপনার এডের লিঙ্ক বা রিভিউ এর লিঙ্ক ফলাফল হিসেবে দেখাবে। ফলে আপনি একসময় অবশ্যই লাভবান হবে। তবে তার জন্য দরকার হবে ধৈর্য্য, কঠোর পরিশ্রম করা মন-মানসিকতা, সততা। মনে রাখবেন আপনি একটি ইকমার্স সাইটের প্রতিনিধিত্ব করছেন, একটি ব্রান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন সুতরাং মার্কেটিং করার সময় আপনার সেই পরিচয় ফুটে ওঠা উচিৎ আপনার অনলাইন এক্টিভিটির মাধ্যমে।

৬. অনেক ক্ষেত্রে এমন ও হতে পারে যে, আপনি যেই ধরনের পন্যের মার্কেটিং করছেন সেই ধরনের পন্যের কেনাবেচার প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও সেই পন্য সম্পর্কিত কোন গ্রুপ বা পেজ নেই। সেক্ষেত্রে আপনি নিজেই একটি গ্রুপ বা পেজ খুলে ফেলতে পারেন এবং সেখানে মেম্বার যোগ করতে পারেন। তবে কখনোই গনহারে মেম্বার এড করবেন না বা গনহারে পেজলাইকের জন্য ইনভাইট করবেন না। তার বদলে আপনি আপনার গ্রুপ বা পেজ সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রুপে লিখুন। বিভিন্ন কমিউনিটি ব্লগে লিখুন তাতে করে আপনার সেই পন্য সম্পর্কিত গ্রুপ/পেজ এ অথরিটি বা বিশ্বাসযোগ্যতা পাবেন। এবং সবাই আপনার রিকমেন্ডেশনে পন্য কিনতে আগ্রহী হবে।

পরিশেষে ধৈর্য্য সহকারে কাজগুলো করতে থাকুন, আশা করি এক/দুই মাসের মধ্যেই সফলতার মুখ দেখতে পারবেন।

অনেক বড় একটা বিষয়কে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হয়েছে। সুতারাং ভুল-ভ্রান্তি হতেই পারে।

কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের ফেসবুক পেজে মন্তব করতে পারেন, অথবা সরাসরি আমাকে ফেসবুকে ইনবক্স করতে পারেন (abdullah mamun)