Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

এক দেশে বাস, আরেক দেশে স্কুল!

mexico১৬ বছরের ফেবে আরা’র বসবাস মেক্সিকোর চিয়ুদাদ জুয়ারেজে। এটি মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলের একটি শহর। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন ফেবে। তবে চোরালাচান বা অন্য কোনো অবৈধ কাজে সঙ্গে সে জড়িত নয়। ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিনের প্রাত্যহিক কাজই হলো এটি। আর রীতিমতো পাসপোর্ট দেখিয়েই দেশের সীমা অতিক্রম করে সে। কারণ তার স্কুলটিই যে পাশের দেশে!

ফেবে আরার মতো মেক্সিকোর আরও শতাধিক শিশু এভাবে প্রতিদিন দেশ বদলে স্কুলে পড়াশোনা করতে যায়। তাদের বেশিরভাগই পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এল পাসো শহরের বিভিন্ন স্কুলে। প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটতেই এসব শিশুরা বাড়ি ছেড়ে ভিড় জমায় নিকটবর্তী সীমান্ত অফিসে। সেখানে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে একে একে নিজেদের পাসপোর্ট দেখিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণের সীমানা টোল নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে জমা দেয় তারা। সব কিছু পরীক্ষার পর সবুজ সংকেত পাওয়া গেলেই সীমানা পেরিয়ে নিজেদের স্কুলের দিকে ছুট দেয় মেক্সিকান শিশুরা। এদের সবারই আছে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া স্টুডেন্ট ভিসা।

chardike-ad

প্রতিদিন আরেক দেশের স্কুলে পড়তে যাওয়া নিয়ে ফেবে’র মন্তব্য, ‘এখন এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি আমি। এটি আমার প্রতিদিনের রুটিন। প্রত্যেকদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠি আমি। আর ঠিক ৬টার মধ্যে সীমানা অতিক্রম করি। তারপর সেখান থেকে স্কুলে যাই। এমনিতে খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে শীতের দিনগুলোয় কাজটা একটু কঠিন হয়ে যায়। কারণ শীতের সকালে ঘুম থেকে ওঠাটা সত্যিই কষ্টকর।’

শুধুমাত্র শিশুরা নয়, প্রতিদিন হাজারেরও বেশি মানুষ এল পাসো ও চিয়ুদাদ জুয়ারেজের মধ্যকার সেতু দিয়ে দুই দেশে চলাচল করে থাকে। মার্কিন সরকারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সালে প্রায় ৪২ লাখ মানুষ এ সীমান্ত পথ ব্যবহার করেছিল। এখনো এ ধারা অব্যাহত আছে।

তবে দুই শহরের মধ্যে অমিল আছে এক জায়গায়। জুয়ারেজ একদিকে যেমন কুখ্যাত ‘অপরাধের শহর’ হিসেবে, অন্যদিকে এল পাসো’র রয়েছে ‘নিরাপদ শহরের’ খ্যাতি। ফলে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এ সীমান্তে গত কয়েক মাসে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

এল পাসোর কংগ্রেসম্যান বেটো ও’রোওর্ক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষার্থেই এ পদক্ষেপ নিয়েছি। দুই শহরের অধিবাসীদের মধ্যে যে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, তা এতে বাধাগ্রস্ত হবে না বলেই বিশ্বাস আমাদের।’ তবে এল পাসোর স্কুলগুলোর ছাত্র-শিক্ষকের আশঙ্কা উল্টো। তারা ভাবছেন এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মেক্সিকোর শিশুদের শিক্ষাগ্রহণ। কিন্তু তাই বলে আশা ছাড়তে নারাজ তারা। সব কিছু আবার আগের মতো হবে বলে স্বপ্ন দেখছেন মেক্সিকানরা।

[তথ্যসূত্র: বিবিসি]