Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নাটকীয়তা শেষে পাকিস্তানের জয়

pakistanদক্ষিণ আফ্রিকা সেই পুরোনো রোগে আক্রান্ত। বড় দলের বিপক্ষে তারা গুটিয়ে যায়। ভারতের পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও সুবিধা করতে পারেনি তারা। চোকার্স খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা যেন আরো একবার নিজেদের চোকার্স হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করে ৩৩৯ রান। জয় পায় ৬২ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে হার মানে ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে। তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪০৮ রান করে প্রোটিয়াসরা। জয় পায় ২৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে করে রেকর্ড ৪১১ রান। এই ম্যাচটিও তারা জিতে নেয় ২০১ রানের ব্যবধানে। টুর্নামেন্টে দুই ইনিংসে তারা চার শতাধিক রান করেছে। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে এসে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে খেই হারিয়েছে প্রোটিয়াসরা। মাত্র ২৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নানা নাটকীয়তা শেষে অলআউট হয়েছে ২০২ রানে।

chardike-ad

সকালে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দ্রুতগতিতে রান তোলার চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর পাশাপাশি বৃষ্টিও বাগড়া দেয় পাকদের ইনিংসে। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে কার্টেল ওভারে ম্যাচ নেমে আসে ৪৭ ওভারে। আর পাকিস্তান ৪৬.৪ ওভারে ২২২ রান তুলে অলআউট হয়ে যায়। ডার্কওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য ৪৭ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৩২ রান।

২৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০২ রানের বেশি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ডি/এল পদ্ধতিতে পাকিস্তান জয় পায় ২৯ রানে। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যতিক্রম হয়ে দেখা দেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাট হাতে পাকিস্তানের বোলারদের শাসন করে একসময় জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৭৭ রানে তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান কুইন্টন ডি কক। এরপর ৬৭ রানে রাহাত আলীর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ডু প্লেসিস (২৭)। এরপর আমলাও ফিরে যান (৩৮)। ৭৪ রানের মাথায় ওয়াহাব রিয়াজের বলে ফাইন লেগে সোহেল খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রিলে রুশো (৬)। ৭৭ রানে রাহাত আলীর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ডেভিড মিলার (০)।

এরপর ১০২ রানের মাথায় ইরফানের বলে হুক শট খেলতে যান জেডি ডুমিনি। কিন্তু সেটা এজ হয়ে চলে যায় ওয়াহাব রিয়াজের হাতে। সেটা লুফে নিতে ভুল করেননি রিয়াজ। ১৩৮ রানের মাথায় সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ডেল স্টেইন। তাকে ফেরান মোহাম্মদ ইরফান। ১৭৩ রানে রাহাত আলীর বলে আউট হন কাইল অ্যাবোট (১২)। দলীয় ২০০ রানের মাথায় সরফরাজের গ্লাভসে বল দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হিটার ব্যাটসম্যান ডি ভিলিয়ার্স। তিনি আউট হওয়ার পর ২০২ রানের মাথায় ইমরান তাহির আউট হলে পরাজয় নিশ্চিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ ইরফান, রাহাত আলী ও ওয়াহাব রিয়াজ ৩টি করে উইকেট নেন।

এর আগে, ব্যাট হাতে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন মিসবাহ-উল-হক। পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ৫ হাজার রান। ৪৯ রান করেন সরফরাজ আহমেদ। ৩৭ রান আসে ইউনুস খানের ব্যাট থেকে। ২২ রান করেন আফ্রিদি। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন ৩ উইকেট নিয়েছেন।

দলীয় ৩০ রানের মাথায় অ্যাবোটের বলে স্টেইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আহমেদ শেহজাদ (১৮)। ৯২ রানের মাথায় রান আউটে কাটা পড়েন সরফরাজ আহমেদ (৩৯)। ১৩২ রানে ‍ডি ভিলিয়ার্সের বলে রুশোর হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ইউনুস খান (৩৯)। ১৫৬ রানে অ্যাবোটের বলে আউট হন মাকসুদ (৮)। ১৭৫ রানের মাথায় মর্নে মরকেলের বলে ডি ভিলিয়ার্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ওমর আকমল (১৩)।

২১২ রানে ডেল স্টেইনের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন শহিদ আফ্রিদি (২২)। ২১২ রানেই ইমরান তাহির এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ওয়াহাব রিয়াজকে (০)। ২১৮ রানে ডেল স্টেইনের বলে মারতে গিয়ে থার্ডম্যান অঞ্চলে মরনে মরকেলের হাতে ধরা পড়েন মিসবাহ (৫৬)। ২২১ রানে স্টেইনের বলে লং অফে ইমরান তাহিরের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রাহাত আলী (১)। ২২২ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সোহেল খান।

এই জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচের ৩টিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার পথ অনেকটাই প্রশস্ত করেছে পাকিস্তান।