অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি ওয়ানডে খেলেছে শ্রীলংকা। ৮ জয়ে লংকানদের দিকেই পাল্লা ভারী। চলতি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছে তাদের চার ব্যাটসম্যান। শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৪৪ রান তুলেছে শ্রীলংকা। তাও মাত্র দুই উইকেটের বিনিময়ে! এসব পরিসংখ্যানের সঙ্গে চাইলে আরো একটি ক্রিকেটীয় সমীকরণ জুড়ে নিতে পারেন— বিদেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলংকা ম্যাচ মানেই লংকান টপ অর্ডার বনাম অসি পেস অ্যাটাকের লড়াই। কিন্তু মাহেলা জয়াবর্ধনে মনে করছেন, স্টার্ক-জনসনদের বলে গতি থাকলেই যে তারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন, এমনটা ভেবে নেয়া বোকামি!
সিডনিতে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে স্বাগতিকরা। কোয়ার্টার ফাইনাল বিবেচনায় উভয় দলের জন্যই ম্যাচটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট তুলে নেয়া লংকানদের অবস্থান দ্বিতীয়। সমান সংখ্যান ম্যাচ থেকে অসিদের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। হারলে তৃতীয় স্থানে নেমে যেতে হবে, এমন সমীকরণ নিয়েই মুখোমুখি হচ্ছে দুই প্রতিপক্ষ। প্রতিটি গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে চারটি করে দল। অর্থাত্ শেষ আটে ওঠার জন্য তৃতীয় স্থান নিরাপদ। কিন্তু শঙ্কাটা অন্য জায়গায়। পুল ‘এ’ থেকে ওঠা তৃতীয় দলটির শেষ আটে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। সে কারণে সিডনিতে কোনো শিবিরই জয়ের বিকল্প কিছু ভাবছে না।
বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা অনেক বেশি নির্মম। স্টার্ক-জনসনদের সামর্থ্যও অনেক বেশি। কিন্তু লংকানদের সাম্প্রতিক ফর্ম তাদের চোখ রাঙানি দেয়ার জন্য যথেষ্ট। দলের ব্যাটিং লাইন আপের ওপর ভরসা রেখে জয়াবর্ধনে বলেন, ‘লাইন-লেংথ ঠিক না রাখতে পারলে যত জোরে বল করবে তত দ্রুত রান উঠবে। অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা খুব জোরে বল করে। এ বিশ্বকাপে আমরা অনেক পেসারের মুখোমুখি হয়েছি। স্টার্ক-জনসনদের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে তাই আমরা খুব উত্তেজিত। গত এক বছরে আমাদের টপ অর্ডার প্রচুর রান করেছে। এ মুহূর্তের বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় আপনাকে তিন থেকে চারজন লংকান ব্যাটসম্যান রাখতেই হবে। আমরা তাই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।’
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এসসিজি) অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের ঘরের মাঠ। এসসিজির উইকেট তাই ক্লার্কের নখদর্পণে। গতকাল অনুশীলন শেষে উইকেট পরখ করে দেখেন ক্লার্ক। তার কাছে উইকেট বেশ শুকনো বলেই মনে হয়েছে। অর্থাত্ স্পিন ধরবে। ‘উইকেট দেখে মনে হচ্ছে স্পিন দারুণ ভূমিকা রাখবে। এর আগে যে রকম ঘাস দেখেছি, তা এবার অনুপস্থিত। উইকেট বেশ শুকনো বলেই মনে হচ্ছে’— অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমকে বলেন ক্লার্ক। লংকান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলা ম্যাথুসও ক্লার্কের সুরে সুর মেলান। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু এসসিজির কিউরেটর পল পার্কার মনে করছেন, উইকেট এখনো পেসবান্ধব। তবে শেষ পর্যন্ত নিজের ওপর ভরসা রেখে স্পিনার হ্যাভিয়ের ডোহার্টিকে দলে ডাকতে পারেন ক্লার্ক। ম্যাথুসের পোড়া কপাল। আগের ম্যাচে আঙুলে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন তারকা স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ।
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জয়ের পর আসরটিতে অসিদের বিপক্ষে এখনো জয়ের মুখ দেখেনি শ্রীলংকা। এ সময়ের মাঝে আয়োজিত মোট চারটি আসরে চারবার লংকানদের মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই জয় তুলে নিয়েছে অসিরা। একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেছে। তবে এসসিজিতে লংকানদের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ আশাব্যঞ্জক। ক্লার্কের ঘরের মাঠটিতে সর্বশেষ আটটি ওয়ানডের মধ্যে ছয়টিতেই জয় পেয়েছে তারা। এএফপি