Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

খালেদা-তারেকের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের সাহস পাচ্ছে না কেউ

KHALEDA TAREKভাঙন বা নতুন কোনো দল নয়, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বেই এগিয়ে চলবে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দলের দুর্যোগময় মুহূর্তে নিজেদের মধ্যে কোনো বিরোধ নয়, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত পরস্পরের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেই চলছে দলীয় কার্যক্রম। আর সরকার বিরোধী চলমান আন্দোলন চলছে দলের শীর্ষ দুই নেতার (খালেদা-তারেক) নির্দেশনা মতোই। দলে ভাঙন সৃষ্টির জন্য দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির। তবে দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, বিএনপি ভেঙে গোপনে নতুন দল গঠনের চেষ্টা হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করার সাহস পাচ্ছে না কেউই। আর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন মূল দল থেকে বের হয়ে বিকল্প দল গঠন করে ইতিপূর্বে কেউ সফল হওয়ার নজির নেই।

জানা গেছে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলনরত বিএনপি থেকে বের হয়ে আরেকটি নতুন দল গঠনের অভিযোগ উঠেছে  কারো কারো বিরুদ্ধে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপির সাবেক বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের নাম উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। এতে দল থেকে বহিষ্কৃত কিছু নেতার সম্পৃক্ততাও উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপির সাবেক একাধিক সংসদ সদস্যরা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাদের অনেকেই বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তারা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বেই রাজনীতি করছেন। দলের এ সংকটময় মুহূর্তে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

chardike-ad

নতুন দল গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠা বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য সাখাওয়াত হোসেন বকুল জানিয়েছেন, বিএনপি ভাঙার প্রশ্নই আসে না। কোনো নতুন দল নয়, তিনি বিএনপির সঙ্গেই রয়েছেন। শীর্ষ নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন- বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী দাবি করে বলেন, নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাকে জড়িত করে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ সংবাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রকৃতপক্ষে এসব সংবাদের কোনো বাস্তবতাও নেই। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন বলেও দাবি করেন এ নেতা। তবে সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেছেন, ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন। ওই সময় মরহুম আবদুল মান্নান ভূঁইয়া দলের ভেতরে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাছাড়া বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে দলের ভেতরে মতভেদ তৈরির প্রক্রিয়া হয়েছিলো। এই মুহূর্তে দলে ফাটল ধরানোর কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি এও বলেন, নতুন দল গঠনের জন্য কেউ তাকে ডাকেন নি, তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

বিএনপির আরেক সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি শীর্ষ নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তিনি বিএনপিতে রয়েছেন। নতুন করে কোনো দল গঠনের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন। দলের চেয়ারপারসন যখন যে দায়িত্ব দেবেন তখন সে দায়িত্ব পালন করতেই প্রস্তুত তিনি।

বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা জানিয়েছেন, বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাকে জড়িয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন। তিনি শীর্ষ নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বিএনপির সঙ্গেই রয়েছেন তিনি। অন্যকোনো দলের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান শীর্ষ নিউজকে বলেন, যে কোনো ব্যক্তিরই স্বাধীনভাবে দল করার অধিকার রয়েছে। যে যার ইচ্ছা মতো রাজনৈতিক দল গঠন ও পরিবর্তন করতে পারেন। এটা নাগরিক অধিকার। তবে যারা মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভিন্ন চিন্তা করেছে তারা অতীতে সফল হওয়ার কোনো নজির নেই। তিনি উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, অতীতে যারা আওয়ামী লীগকে ভেঙে বাকশাল গঠন করেছিলেন তারাও টিকে থাকতে পারেননি। বাকশালও রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থান পায়নি। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক কয়েকজন নেতাকে দিয়ে নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বিএনপির অন্যতম এ নীতিনির্ধারক বলেন, এসব খবর সরকারের অপকৌশল হতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নানা অপকৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। এটা হয়তো তারই অংশ হতে পারে।

তিনি বলেন, বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়াও চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ফলাফল কি এসেছে এটা দেশবাসী জানেন। এসব করে কর্মীদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হলেও তা হালে পানি পাবে না।

গত ৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওনার (খালেদা জিয়া) দলের অনেক সাবেক এমপির সঙ্গেও আমার (শেখ হাসিনা) কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পরপরই গুঞ্জন শুরু হয় বিএনপির কোন পর্যায়ের লোকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারা কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে?

জানা গেছে, সাবেক হুইপ বরিশালের শহীদুল হক জামাল ও রাজশাহীর বাগমারা-মোহনপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছেন। কিন্তু কি উদ্দেশ্যে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন সে বিষয়ে তারা গণমাধ্যমকে কিছুই জানান নি। তবে এ দুই জনকেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০০৪ সালের ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের তৎকালীন (মরহুম) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল সরকার পতনের ট্রাম্প কার্ড দেখাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই সময় আব্দুল জলিল বিএনপির কিছু সংসদ সদস্যকে পদত্যাগ করাতে চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিলো। সেই সময়ও আলোচনায় ছিলেন আবু হেনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগেও বিএনপি ভাঙতে সরকার ষড়যন্ত্র করেছিলো বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই প্রক্রিয়ায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে পাওয়া যায়নি। শীর্ষনিউজ।