Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভালুকায় গাছে ঝুলিয়ে মামা-ভাগ্নেকে নির্যাতন

mamময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হাতিবেড় গ্রামের নিরীহ দুলাল ও মনির নামে মামা-ভাগ্নেকে পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়িয়া উপজেলার কাহালগাঁও বাজারের পাশে আফতাব উদ্দিনে মেম্বারের বাড়ির লিচু গাছের ঢালে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারপিট করে এবং পায়ের নখ ওপড়ে ফেলে।

এ ঘটনায় গত বুধবার ময়মনসিংহ আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করা হয়। আগের মামলা না তোলে নেয়ায় দুলাল ও তার ছেলে মোশারফ হোসেনকে গত বুধবার রাতে বসত ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে অহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

chardike-ad
 এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার হাতিবেড় গ্রামের মৃত হাতেম আলী ছেলে দুলাল ও স্ত্রী শেফালী দীর্ঘদিন যাবত সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন। বিদেশে থাকা অবস্থায় সেখান থেকে জমি কেনার জন্য টাকা পাঠালে দুলালের শ্যালক হামিদ তার নিজ নামে ও তার বোনের নামে জমি ক্রয় করাকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে মনোমালিন্য হয়। শ্যালকের নামে জমিজমা ক্রয়ের ব্যাপারে গত ১০ মার্চ ভালুকা উপজেলার হাতিবেড় গ্রামের দুলাল মিয়া ও ভাগ্নে মনির হোসেনকে নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলা কাহালগাঁও গ্রামে বেড়াতে যান। যে ঘরটিতে রাতে দুলাল ও মনির ঘুমিয়ে ছিলেন সেই ঘর থেকে মোটরসাইকেল চুরি হয়। চুরির অপবাদ দিয়ে দুলাল মিয়া ও মনির হোসেনকে আটক করে সারাদিন অমানুষিক নির্যাতন করেন আশরাফ আলী, সুমন মিয়া, বাদল মিয়া, জালাল মিয়া, মানিক শনি, সুরুজ আলীসহ স্থানীয় ১০/১৫ জন।

এক পর্যায়ে প্রায় শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে জামাই দুলাল মিয়াকে শ্বশুরবাড়ির পাশে লিচু গাছে ঝুলিয়ে ব্যাপক মারপিট করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা সুমন ও জালাল মিয়া। এমনকি প্লাস দিয়ে তার পায়ের তিনটি নখ ওপড়ে ফেলে।

এ ঘটনার  প্রতিবাদে শনিবার (১৪ মার্চ) সকাল থেকে চার ঘণ্টা ভালুকা-ঘাটাইল সড়ক অবরোধ করে রাখে নারী-পুরুষসহ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় কাহালগাঁও গ্রামের যুবলীগ নেতা সুমন মিয়া, আশরাফ আলী, বাদল মিয়া, জালাল মিয়া মানিক শনি, সুরুজ আলী, হামিদ মিয়া, আঃ মান্নান, রিয়াজ ড্রাইভার, পাঞ্চু বর্মনসহ ১০ জন এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে ১৩ মার্চ ফুলবাড়ীয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে নির্যাতনের শিকার দুলাল মিয়ার ভগ্নিপতি হাবিবুর রহমান হবি। মামলা নং- ৬ তারিখ ১৩/০৩ ২০১৫ ইং।

এ ছাড়া গত ১৫ এপ্রিল বুধবার ময়মনসিংহ আদালতে পূর্বের মামলার ১০ জন আসামিসহ ১৮ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে আরও একটি মামলা করেন। মামলাটি এফআইআর করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালত ভালুকা থানা অফিসার্স ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। মামলার বিষয়টি আসামিরা জেনে ফেলার পর রাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাদের পরিবারের লোকজন দাবি করেন।

দুলালের ছোট ভাই শাহজাহান বলেন, আগের মামলাটি উঠিয়ে নেয়ার জন্য বারবার আসামিরা হুমকি দিয়ে আসছে। বুধবার মামলা করায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে গভীর রাতে ঘরের সিঁধ কেটে ও ঘরের টিনের বেড়া কেটে আসামিরা আমার ভাই ও ভাতিজাকে অপহরণ করছে। ঘটনার পর থেকে ভাতিজার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার টাকা মেরে দেয়ায়। এলাকার লোকজনের কাছ থেকে ভিক্ষা করে আমার ভাইয়ে চিকিৎসা করিয়েছি।

দুলালের বৃদ্ধ মাতা আকিমন নেছা বলেন, ছেলে ও নাতিকে মনে হয় ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছে।

অপহরণের সংবাদ পেয়ে ফুলবাড়ীয়া থানা এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, ঘটনাটি রহস্যজনক বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভালুকা মডেল থানা অফিসার্স ইনচার্জ গোলাম সারোয়ার বলেন, অপহরণের বিষয়টি আমার জানানেই। তবে খোঁজ নিচ্ছি। আদালতের মামলার কপিটি এখনো আমি পাইনি।

১নং উথুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের হাতিবেড় গ্রামের দুলাল সস্ত্রীক বিদেশ থাকা অবস্থায় তার অর্জিত সব টাকা শ্যালক হামিদের নামে পাঠায়। সেই টাকাগুলি দুলালের শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মসাৎ করে একেবারে নিঃস্ব বানিয়ে দিয়েছে। চোর বানিয়ে তাদেরকে নির্যাতন করার ঘটনায় অত্র ইউনিয়নের লোকজন চাঁদা তোলে মামলা ও দুলালের সংসার চালানো হচ্ছে।