গত ২০ এপ্রিল ঘুষ কেলেঙ্কারির দায়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে লি ওয়ান কুয়ের পদত্যাগের পর এখনো ফাঁকা আছে দক্ষিণ কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর পদটি। ধারণা করা হচ্ছে এই আসনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হতে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে’কে।
প্রায় এক সপ্তাহ পর গত সোমবার কাজে যোগদানের পরেও প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে খুব একটা ইচ্ছার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন না রাষ্ট্রপতি। বেশ কিছু প্রার্থীকে মনোনীত করা হলেও তাদের কেউ কেউ শুনানিকালে সমালোচনার ভয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। আর বাকীদেরকে প্রেসিডেন্ট খুব একটা যোগ্য মনে করছেন না। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে যাচাইকরণ শুনানি ব্যতীত অনেককেই পাওয়া যায়, তবে তারা ত্রুটিপূর্ণ”। তবে ওই কর্মকর্তা এও বলেন, “অনেক সময় এই যাচাইকরণ শুনানির কারণে মেধা সম্পন্ন ব্যক্তিকে খুজে পেতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার”।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র মিন খিয়ং উক বলেন, “ প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে এই মুহূর্তে আমরা কিছু বলতে পারছিনা”।পার্ক গুন হে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মনোনীত করেছিলেন। সেই তালিকার প্রথমেই ছিলেন সাংবিধানিক আদালতের সাবেক প্রধান কিম ইয়ং জুনকে। তবে তিনি তার পূত্রের সামরিক বাহিনী থেকে অব্যাহতি এবং আবাসিক খাতে নানাবিধ অভিযোগের ফলে নিজের অপারগতা প্রকাশ করেন। বাকি দুই জনের মাঝে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি আন দে হি এবং সাবেক সাংবাদিক মুন ছাং খিয়ক। এই দুইজনই নিজেদের নৈতিকতার দোহাই দিয়ে দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
এদিকে গত বুধবার সংসদে সংশোধিত পেনশন বিল পাশে ব্যর্থ হয় ক্ষমতাসীন সেনুরি পার্টি। যদিও গত সপ্তাহে বিলটি পাশের ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী পক্ষ উভয় সম্মত হয়েছেন, তারপরেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা বিলটি সংসদে গৃহীত এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি কেলেঙ্কারির বিষয়টি কোন পর্যায়ে যায়, এইসব দিক বিবেচনা করেই হয়ত প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিবেন। সেক্ষেত্রে হয়ত এই পদে দেখা যেতে পারে বর্তমান অর্থমন্ত্রী ছল খিয়ং হোয়ান, শিক্ষামন্ত্রী হোয়াং উ ইয়ে, সাবেক মৎস্যমন্ত্রী লি জু ইয়ং, খিয়ংগি প্রদেশের সাবেক গভর্নর কিম মু সু অথবা সেনুরি পার্টির সাংসদ, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয় নিরাপত্তা কার্যালয়ের প্রধান লি হান কু। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে রাষ্ট্রপতি দুর্নীতিমুক্ত ক্লিন ইমেজের অধিকারীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করছেন।
বলা বাহুল্য যে, প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে নিজের রাষ্ট্রপতি হওয়ার চেয়েও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে কঠিনতর পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। খবর- কোরিয়া টাইমস।