Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পাচার হওয়া মানুষের অঙ্গ বিক্রি!

pacharশুধু টাকার বিনিময়ে মুক্তিপণ আদায়ই শেষ নয়, পাচার হওয়া মানুষের অঙ্গও বিক্রি করা হয় থাইল্যান্ডে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের শংখলা প্রদেশের গণকবরগুলোতে পাওয়া মৃতদেহের ময়নাতদন্তে এ বিষয়টি উঠে আসে।

সাগর পথে পাচার হওয়া মানুষকে নৌকা থেকে নামানোর পর প্রথমেই পাচার হওয়াদের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ম্যাচিং হলে, চাহিদা অনুসারে কিডনি, লিভার, চোখসহ অন্যান্য প্রতিস্থাপনযোগ্য অঙ্গ বিক্রি করে দেয়া হয়।

chardike-ad

প্রত্যক্ষদর্শী নৌকায় পাচার হওয়া এক বাংলাদেশি নাগরিক জানান, থাইল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছুলে, নৌকা থেকে নামিয়ে সবার রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এরপর চাহিদা অনুযায়ী কিডনি ও চোখের অবস্থা বুঝে সেসব লোকদের আলাদা করে রাখা হয়।

প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা আর্ন্তজাতিক সংস্থা তেনাগানিতার সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক প্রোগ্রাম অফিসার জানান, পাচারকারীদের অন্যতম লাভের জায়গা হচ্ছে মানবদেহের অঙ্গ বিক্রি। অনেক সময় মুক্তিপণের টাকা দিয়েও ছাড়া পায় না মানুষ। কারণ দেখা যায়, তার রক্ত, কিডনি বা চোখের ম্যাচিং হয়েছে চাহিদানুযায়ী, যা টার মুক্তিপণের টাকার চেয়েও বেশি হয়ে থাকে।

জানা যায়, থাইল্যান্ড ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপের সেরা হাসপাতালগুলোতে প্রতিস্থাপনের জন্য পৌছে যায় এসব মানব অঙ্গ। পৃথিবীতে শুধু ইরানে মানবদেহের অঙ্গ বিক্রিকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। ফলে ইরানেও পাঠানো হয় সুস্থ অঙ্গের মানুষদের। এছাড়াও জাপান, ইতালি, ইসরাইল, কানাডা, তাইওয়ান, আমেরিকা এবং সৌদি আরবে স্বাস্থ্যকর অঙ্গ বিক্রি করা হয়।

২০১২ সালের গ্লোবার অবসারভেটরি অন ডোনেশন অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টেশনের তথ্যানুযায়ী মানবদেহের সবচেয়ে বেশি প্রতিস্থাপিত অঙ্গ কিডনি। যা বিশ্বজুড়ে মোট প্রতিস্থাপিত অঙ্গের ৬৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে লিভার ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ, লাঞ্জ ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ, অগ্নাশয় ২ দশমিক ১১ শতাংশ, ছোট পেট ০ দশমিক ১৫ শতাংশ।

নৌকায় পাচার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, থাইল্যান্ডে পাচারকারী দালালদের সঙ্গে কয়েকজন চিকিৎসকও থাকেন। যারা রক্ত পরীক্ষা করান এবং তাদের ল্যাবে এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিষয়টি সম্পন্ন করেন। এসব চিকিৎসকদের বেশিরভাগই চীন ও তাইওয়ানের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর মানবদেহের ১০ হাজারের ওপর অঙ্গ পাচার হয়। যা প্রতিস্থাপন করা মোট অঙ্গের ১০ শতাংশ।