Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভুল মামলায় ৭ বছর সাজা, সংসার তছনছ

mamlaভুল পরিচয়ের শিকার হয়ে জীবনের সবকিছু হারানো গোপাল শেট্টে ন্যায়বিচারের জন্য আমরণ অনশনে বসেছেন।

মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানের এক কোণে একা গুটিসুটি মেরে ধর্নায় বসা গোপালকে ধর্ষণের দায়ে সাত বছর জেল খাটতে হয়েছে।
হাইকোর্ট অবশ্য পরে তাকে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।

chardike-ad

গোপালের দাবি প্রশাসন ও আইনের ভুল প্রয়োগের কারণে তার জীবন যেভাবে তছনছ হয়ে গেছে এর দায়িত্ব কে নেবে?
তিনি কোনো অন্যায় না করলেও ভুল পরিচয়ে তাকে ধর্ষণকারী ধরে নিয়ে যেভাবে জেল খাটতে হল তার দায় কে নেবে?
গোপাল পেশায় বাবুর্চি ছিলেন। স্ত্রী এবং দুই কন্যাকে নিয়ে তার ছিল সুখের সংসার।
মুম্বাইয়ের লক্ষ লক্ষ মানুষের মত গোপাল প্রতিদিন লোকাল ট্রেনে করে কাজে যাতায়াত করতেন। কিন্তু ২০০৯ সালের ২৯শে জুলাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

বিবিসি হিন্দির অশ্বিন অঘোরকে গোপাল বলছেন তিন দিন তাকে কোনো কারণ না জানিয়ে আটকে রাখা হয়।
পরে তাকে বলা হয় আওরাঙ্গাবাদ থেকে আসা ২৮ বছর বয়সী এক তরুণী গোপালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছে।

গোপাল অনেক কান্নাকাটি করেছেন- বারবার বলেছেন তিনি নির্দোষ। কিন্তু প্রশাসন তার কথা কানেই নেয়নি।
পুলিশ তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে- আদালতে দশ মাস ধরে শুনানি হয়েছে এবং আদালত তাকে সাত বছরের কারাদন্ড দিয়েছে।

মেয়েদের যেতে হয়েছে অনাথ আশ্রমে।
গোপাল যখন নাসিক কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল খাটছেন তখন তার পরিবার তিলে তিলে ধ্বংস হয়েছে।
মনোকষ্টে তার বাবা মারা গেছেন আর দুই কন্যাকে অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে গোপালের স্ত্রী দ্বিতীয়বার বিয়ে করে নতুন সংসার পেতেছেন।

মেয়েদের কথা বলতে গিয়ে গোপালের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে।
হাইকোর্ট আমাকে মুক্তি দিয়েছে ঠিক- কিন্তু আমার জীবনের মূল্যবান সাতটা বছর কে ফিরিয়ে দেবে?

গোপাল শেট্টে হাইকোর্টে শুনানির সময়ে প্রমাণ হয়ে যায় যে ধর্ষিতা অভিযোগ করেছিলেন ‘গোপি’ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে, কিন্তু পুলিশ গোপালকে ধর্ষনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলে।
মুম্বাই হাইকোর্টে শুনানি চলার সময়ে জেলেই থাকতে হয় গোপালকে।

গোপাল শেট্টের দাবি যেসব পুলিশ কর্মকর্তার জন্য আমার জীবন ছারখার হয়ে গেছে তাদের সাজা দেয়া হোক।

গোপাল বলছেন, ‘‘হাইকোর্ট আমাকে মুক্তি দিয়েছে ঠিক- কিন্তু আমার জীবনের মূল্যবান সাতটা বছর কে ফিরিয়ে দেবে? আমার এলোমেলো হয়ে যাওয়া পরিবারকে কেউ কি আবার জোড়া লাগাতে পারবে? অনাথাশ্রমে বড় হয়ে ওঠা আমার দুই মেয়ে কি কোনোদিন আবার তাদের আগের জীবন ফিরে পাবে?’’

গোপাল বলছেন, ‘‘যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ভুল পরিচয়ে আমাকে শাস্তি দিয়েছে- আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে- আমি চাই তাদের সাজা দেওয়া হোক। আমি শুধু ন্যায় বিচার চাই।’’
আমরণ অনশনে বসা গোপালের দাবি তার আপিল সরকার আমলে নেবে এবং দোষীদের সাজা দেবে।
সূত্র : বিবিসি।