রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমাচ্ছিলেন তারা। গভীর রাতে একদল সশস্ত্র লোক এসে ঘর থেকে বের করে তাদের এক এক করে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। একজন-দুজন নয়, পাঁচজন নারীকে এভাবেই হত্যা করে নিরাপদে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে কাঞ্জিয়া গ্রামের। ডাইনি সন্দেহে তাদের খুন করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কুসংস্কারের বলি হয়ে একসঙ্গে ৫ নারীকে হত্যা দেশটিতে বেশ তোলাপাড় ফেলে দিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ডাইনি সন্দেহ তাদেরকে খুন করা হয়েছে। শনিবার ওই পাঁচজন নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই গ্রামের ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।
রাঁচির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজ কুমার লাকড়া জানিয়েছেন, কাঞ্জিয়া গ্রামটি রাঁচির মান্ডর ব্লকের অন্তর্গত। শনিবার এই গ্রাম থেকেই উদ্ধার হয় পাঁচ নারীর মৃতদেহ।
তিনি আরো জানান, শুক্রবার মাঝ রাতে ইট্টওয়ারি খালকো নামে এক নারীর বাড়িতে হানা দেয় কয়েকজন সশস্ত্র গ্রামবাসী। প্রত্যেকের হাতে ছিল লাঠি-সোটা এবং ধারালো অস্ত্র। দুর্বৃত্তদের দলে বেশিরভাগই ছিল তরুণ। টেনে হিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করা হয় ওই নারীদের। প্রতিরোধ করার কোনো সুযোগই পাননি নিহতেরা। এই ঘটনায় জড়িতরা প্রত্যেকে কাঞ্জিয়া গ্রামের। বাইরের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়।
নিহতদের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, একে একে ওই নারীদের প্রত্যেককে প্রথমে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে এবং তার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্যমতে, ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত, এই ১২ বছরে দেশে ডাইনি সন্দেহে খুন হয়েছেন ২০৯৭ জন। এর মধ্যে ৩৬৩ জনই ঝাড়খন্ডের। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ডাইনি সন্দেহে ৫৪ জন নারীকে খুন করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র : ডন, হিন্দুস্থান টাইমস।