Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে, এখনো নিখোঁজ ৬৩৮ জন

২৭ এপ্রিল, ২০১৩, ঢাকাঃ

লাশ উদ্ধার ৩১৪।
জীবিত উদ্ধার ২৪০০।
নিখোঁজ ৬৩৮।
তিনটি অংক। আশঙ্কা হলো প্রথম অংক দুটি কেবলই বাড়ছে। আসলে বাড়ছে মৃতদেহের সংখ্যা। এর শেষ কোথায় কেউ জানে না। কখন শেষ মৃতদেহটি উদ্ধার করা হবে তাও অজানা। অন্যদিকে ভেতরে আটকেপড়া জীবিতদের আহাজারি আর কান্না যে হাহাকারের জন্ম দিয়েছে তার শেষ পরিণতি কী- কেউ বলতে পারছে না।
তবে প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, নিখোঁজের সংখ্যা ৬৩৮। এদের মধ্যে জীবিত উদ্ধারের সংখ্যাটা যে খুব কম হবে তা ধরে নেয়া যায়। আর যদি নিখোঁজের সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে মৃতদেহের সংখ্যাও বাড়বে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সংখ্যাটা হাজার ছাড়িয়ে যায় কিনা। তবে হাজার ছাড়িয়ে যাক বা না যাক সেই অংক মেলানোর হিসাবে আর নেই দেশবাসী। তারা অবাক বিস্ময়ে হতবাক এবং ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যা অনুভব করলো সেটি হলো-কিভাবে মানুষকে ডেকে এনে হত্যা করা হয়।তবে সবাই আশা করছেন, জীবিতরা প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে আসবেন। তাদের উদ্ধার করা হবে। বহুতল ভবনটির ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি খুপরি থেকে শুক্রবার বিকেলে আরো ২৩ জন জীবিত মানুষের সন্ধান পেয়েছেন উদ্ধার কর্মীরা। চাপা পড়া এই মানুষগুলোর কাছে ওপর থেকে পাইপে অক্সিজেন পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন উদ্ধার কর্মীরা।

chardike-ad

305736_10151554116167590_1119263478_nউদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, কংক্রিট কেটে সুড়ঙ্গ করে সেখান থেকে আটকদের বের করে আনার জন্য এখন মরিয়া চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গত রাত থেকে এ নিয়ে এরকম তিনটি পৃথক খুপরির সন্ধান পেলেন উদ্ধারকর্মীরা, যেখানে সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হতে ৫০ জন মানুষ আটকে আছেন বলে তারা ধারণা করছেন।

যে ২৩ জনের অবস্থান শুক্রবার বিকেলে শনাক্ত করা গেছে তাদের কাছে একটি সরু ছিদ্রপথে টর্চলাইট এবং ছোট ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাভারে উদ্ধার কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, আরো বেশ কিছু জীবিত মানুষের সন্ধান মিলেছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে যত অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সেগুলো সব রানা প্লাজার সামনে এনে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়।

এর আগে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারাদিনে তারা ৭০ জনের বেশি মানুষকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।

উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সব জীবিত মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব না হচ্ছে, ততক্ষণ তারা ধ্বংসস্তূপ সরাতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ঝুঁকি নেবেন না।

গত বুধবার ঢাকার কাছে সাভারে নয় তলা ভবনটি ধসে পড়ে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে এটি এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যে তিনশ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আরো বহু মানুষ এখনো ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, ভবন ধসের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভবনের মালিক যুবলীগ নেতা সোহেল রানা ও পাঁচটি গার্মেন্টসের মালিককে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। পোশাক শ্রমিকরা এটাকে ‘শ্রমিক হত্যা’ আখ্যায়িত করে দুদিন ধরে আন্দোলন করছে। শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিজিএমইএ শনি ও রোববার সারা দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে সারা দেশে যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে তাতে তিনি বিচলিত হয়েছেন বলে মনে হয় না। শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্র্যাবের এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেছেন, তার বক্তব্য মিডিয়া বিকৃত করেছে। তবে তার বক্তব্য কোনো প্রিন্ট মিডিয়ায় ছাপা হয়নি, প্রচারিত হয়েছে বিবিসি বাংলায়। এতে তার রেকর্ডকৃত বক্তব্য বিকৃত করার কোনো সুযোগ নেই। আর এ কারণেই সম্ভবত তার দলের লোকেরাও তার ওপর ক্ষেপেছেন।
খবরঃ নতুনবার্তা