শ্রম আইনে সংশোধনী এনেছে সৌদি আরব। সম্প্রতি আরবনিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সৌদিতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হবে। এই ছুটির সময় সম্পূর্ণ বেতন পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে প্রতিষ্ঠান।
এতে জানানো হয়েছে, গর্ভবতী নারীর মেডিকেল সার্টিফিকেটে উল্লেখিত সন্তান প্রসবের জন্য নির্ধারিত তারিখের কমপক্ষে চার সপ্তাহ আগেই এই ছুটি মঞ্জুর করতে হবে। বেতন-ভাতাসহ টানা ১০ সপ্তাহের ছুটি পাবেন প্রত্যেক গর্ভবতী নারী। এছাড়া সন্তান প্রসবের পর বাড়তি ছুটির প্রয়োজন হলে বিনা বেতনে আরও এক মাস ছুটি কাটাতে পারবেন তারা।
সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্বল বা অসুস্থ শিশুর জন্ম দান অথবা শিশুর বিশেষ নজরদারির জন্য মেডিকেল প্রতিবেদন থাকলে ওই নারীকে অতিরিক্ত এক মাস ছুটি দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনে অতিরিক্ত আরও এক মাস ছুটি দেওয়া হবে; তবে এই অতিরিক্ত ছুটির জন্য কোনো বেতন পরিশোধ করা হবে না।
সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, অমুসলিম নারীদের স্বামীর মৃত্যু হলে বেতনসহ ১৫ দিনের ছুটি পাবেন তারা। এই সময়ের মধ্যে তার পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অন্য কোনো শ্রমিককে নিয়োগ দিতে পারবে না।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, আইনে সংশোধনীতে পুরুষদের জন্যও ছুটির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বেতনসহ তিন দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি পাবে পুরুষেরা। এছাড়া কোনো পুরুষের স্ত্রী বা পরিবারের কারো মৃত্যু হলে অথবা বিয়ের জন্য বেতনসহ পাঁচ দিনের ছুটি পাবেন তারা।
আরও জানানো হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠান এই শ্রম আইন ভঙ্গ করলে এক লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। সেইসঙ্গে ৩০ দিনের জন্য অথবা স্থায়ীভাবে ওই কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পলায়নের মিথ্যা অভিযোগ করলে নিয়োগকারীদের শাস্তির বিধান রেখে গত জুলাই মাসে শ্রম গাইডে সংশোধন করেছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠান প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিলে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য তার সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
গত আগস্টে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রবাসী শ্রমিকদের পাসপোর্ট জব্দ না করা যাবে না। প্রবাসী শ্রমিকদের পাসপোর্ট জব্দ করে রাখা নিয়োগকর্তাদের জন্য কখনও বৈধ নয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ নিয়োগকারীদের জরিমানা গুণতে হবে।
এছাড়া সৌদিতে বসবাসরত প্রবাসীদের শুধু গুরুতর অপরাধের জন্যই কারাদণ্ড দেওয়া যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রবাসীদের ছোট কোনো অপরাধের জন্য শুধু অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অপরাধের জন্য কোনো প্রবাসীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজন হলে তা একটি কমিটি নির্ধারণ করে দেবে।