Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কেমন হবে বাহরাইন প্রবাসিদের আচরণ?

bahrainজীবনের তাগিদে আমাদের দেশের অনেকেই বাহরাইনে অবস্থান করছেন। জীবন-জীবিকা ও সময়ের তাগিদে আপনাকে পা বাড়াতে হতে পারে এ দেশটির উদ্দেশ্যে। কোন দেশ বা সমাজে যাওয়ার আগে সে দেশের আদব-কায়দা বা চালচলনের শিষ্টাচার সম্পর্কে যথেষ্ঠ জ্ঞান রাখা অত্যাবশ্যক। কাজেই বাহরাইনে গমনের পূর্বে আগে ভাগেই জেনে রাখুন দেশটিতে গিয়ে কি করবেন আর কি করা থেকে বিরত থাকবেন।

শুরুতেই সাক্ষাতের ক্ষেত্রে আপনি যেগুলো করবেন এবং যে কাজ গুলো এড়িয়ে চলবেন:

chardike-ad

## বাহরাইনিরা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ায় তাদের যে কেউই আপনার সাথে পরিচিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতে পারে। কারো কাছে নিজের পরিচয় প্রদানের সময় আপনার নাম (পদবীসহ) কি করছেন, কোন দেশ থেকে এসেছেন এবং বর্তমানে কোথায় থাকছেন একসাথে সব গুলোই বলা ভাল।

## কারো সাথে কথা বলার সময় হাসি মুখে এবং চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। কথা বলার সময় আশে পাশে তাকানোটাকে বাহরাইনিরা ভদ্রতামূলক আচারণ হিসেবে গন্য করে না।

## সাক্ষাতের শুরুতে কথা বলার সময় বাহরাইনি পুরুষেরা একে অপরের সাথে মুসাফা বা হ্যান্ডসেক করে থাকে। পাশাপাশি বিদায়ের সময় একে অপরের কপাল বা কপোলে চুমু খেয়ে থাকে।

## আর মহিলারা খুব কাছের হলে একে অপরকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে এবং চুমু দিয়ে বিদায় জানায়। তারা যদি আপনার সাথে এগুলো করে থাকে তাহলে আপনার কাছে বিরক্তির মানে হলেও সে ভাবটা যেন বাহিরে প্রকাশ না পায়।

## বাহরাইনিরা সময়ের ব্যপারে বেশ সচেতন তাই সাক্ষাতের পূর্বে একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিতে হবে। এবং কোনক্রমেই উক্ত সময়ের পরে উপস্থিত হওয়া যাবে না।

উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে:

## বাহরাইনিরা তাদের খুব কাছের বন্ধুদেরকে জন্মদিন, ঈদ, হজ, রমজানকে কেন্দ্র করে একে অপরকে উপহার দিয়ে থাকে। কাজেই আপনার কারো সাথে ভাল বন্ধুত্ব হলে অবশ্যই তাকে এই দিনগুলোতে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কেউ উপহার দিলে তা মোটেই ফিরিয়ে দেওয়া চলবে না।

## যদি কোন বাহরাইনির বাসাতে দাওয়াত খেতে যান তবে সেখানেও একটা উপহার নিয়ে হাজির হতে হবে। আর উপহারটা নিজ দেশের কোন জিনিস হলে আরো ভাল হয়।

## বাহরাইন একটা মুসলিম দেশ হওয়ায় সেখানের কাউকেই উপহার হিসেবে এ্যালকহোল জাতীয় কিছু দেওয়া যাবে না। যেমন- মদ, বিড়ি-সিগারেট।

## কারো কাছ থেকে কোন উপহার পেলে তৎক্ষণাৎ সে জায়গায় বসে প্যাকেটটি খোলা উচিত নয়।

কারো বাড়িতে দাওয়াত গ্রহনের সময়ঃ

## কারো বাসায় দাওয়াত গ্রহণ করতে গিয়ে যদি দেখা যায় দাওয়াত প্রদানকারী/ হোস্ট জুতা পরিহিত অবস্থায় নেই তাহলে অবশ্যই আপনার জুতাটিও দরজার সামনে খুলে রাখতে হবে।

## বাহরাইন মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় তারা একটু রক্ষণশীল পোষাক পরিধান করে থাকে। আপনি যদি মেয়ে হন কারো বাসায় দাওয়াত গ্রহণের সময় অবশ্যই আপনাকে টাইট পোশাক পরিধান থেকে বিরত থাকতে হবে।

## কারো বাসায় দাওয়াত গ্রহনের জন্য নির্ধারিত সময়েই উপস্থিত হতে হবে এবং দাওয়াত গ্রহনের সময় বা সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে যেমন বিয়ে বাড়ি এ সমস্ত স্থানে ব্যবসায়িক আলোচনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

## খাবার দাবার গ্রহন ও আসন গ্রহনের সময় অবশ্যই বড়দের আগে সুযোগ দিতে হবে।

## খাবার খাওয়ার সময় বেশি কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং অবশ্যই খাবার ডান হাতে খেতে হবে পাশাপাশি সামনে পরিবেশনকৃত সব ধরনের খাবার অল্প হলেও খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রে:

## ব্যবসায়িক কাজকর্মে আপনাকে অবশ্যই সহিষ্ণুতার ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। ব্যবসায়িক কাজে কারো সাথে দেখা করতে চাইলে সময় ও তারিখ নির্ধারণ করে যেতে হবে এবং এটি তৃতীয় কোন ব্যক্তির মাধ্যমে না করে নিজে কারাই ভালো। এটা ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনবে।

## ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য কিছু কিছু আরবী শব্দ শিখে নেওয়া ভাল। আরবী শব্দে কথা বলতে পারা লোকদেরকে সেদেশের লোকেরা আলাদাভাবে কদর করে থাকে।

## বাহরাইনিরা ব্যবসায়িক কোন মিটিং শুরুর আগে একে অপরের স্বাস্থ্য ও পরিবারে খোজ খবর নিয়ে থাকে। এবং তারা খুব বেশি তাড়াহুড়া করে কোন সিদ্ধান্তে পৌছায় না। কিন্তু আপনি যদি সেটা করতে চান তাহলে আপনার ব্যবসায়িক সম্পর্কে ভাটা পড়তে পারে।

## ব্যবসায়িক কাজ শুরুর পূর্বে অবশ্যই কার্ড বিনিময় করতে হবে। ব্যবসায়িক কাজে কার্ড বিনিময়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই দুই হাত ব্যবহার করতে হবে। কার্ডটি তৈরীর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ওটার একপিঠে আরবীতে অনুবাদ করে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে যাতে করে স্থানীয়দের বুঝতে সমস্যা না হয়।

## কোন ব্যবসায়ির সাথে আলাপ-আলোচনাকালে বারবার ঘড়ির দিকে তাকানো উচিত নয়। কেননা তাদের কাছে এটি সম্মান হানিকর ব্যবহার হিসাবে গণ্য হতে পারে।