বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা ‘খিলাফত রাষ্ট্র’ কায়েম করতে চায়। আর এই ‘উদ্দেশ্য’ সাধন করতে তারা বিভিন্ন দেশে বোমা হামলা চালিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বর্বরতার চরম সীমানায় পৌঁছেছে আইএস।
এতদিন তাদের হামলার শিকার হয়েছেন বিভিন্ন দেশের নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধরা, শিকার হয়েছে শিশুরাও। কিন্তু তখনও ফলাও করে শিশুদের হত্যার হুমকি দেয়নি জঙ্গিরা। কিন্তু সদ্যজাত শিশু যদি প্রতিবন্ধী হয় তবে তাকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত এই জঙ্গিগোষ্ঠীটি। তাদের মতে প্রতিবন্ধী শিশুদের হত্যা করা জায়েজ!
সম্প্রতি সদ্যজাত শিশু প্রতিবন্ধী হলে তাকে হত্যা করার নতুন ফতোয়া জারি করেছে এই সংগঠনটি। শুধু তাই নয় এই ফতোয়া প্রতিষ্ঠার জন্য সদস্যদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একটি প্রতিবন্ধী শিশু আর সব শিশুর চেয়ে আলাদা। তারা ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় কোনো কিছুই বোঝে না। অথচ এই শিশুরাই এখন আইএসের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ইরাকের একটি সামাজিক কর্মী সংস্থা ‘মসুল আই’ জানিয়েছে, ‘আইএস একটি বর্বর ফতোয়া জারি করেছে। মৌখিক এই ফতোয়া অনুযায়ী সদ্যজাত শিশুর জন্মগত বিকৃতি, মানসিক প্রতিবন্ধী, অক্ষম বা এ ধরনের কোনো লক্ষণ ধরা পড়লে শিশুটিকে হত্যা করতে পারবে সংগঠনটির যোদ্ধারা।’ তারা প্রতিবন্ধী শিশুদের ‘রাষ্ট্রের বোঝা’ বলে উল্লেখ করেছে।
ইতোমধ্যেই আইএস এক সপ্তাহ থেকে তিন মাস বয়সী প্রায় ৩৮টি শিশুকে হত্যা করেছে। এদের অধিকাংশই জন্মগত ত্রুটি বা শারিরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মেছিল। তাদের ইনজেকশন বা শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক শিশুই সিরিয়া এবং মসুলের।
সামাজিক সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘পুরুষ, নারী এবং তরুণদের হত্যা করেও সন্তুষ্ট নয় আইএস। এখন তারা শিশুদের হত্যা করছে।’ এ খবর প্রচারের পর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ‘আমি এই শিশুদের করুণ পরিনতির কথা শুনে খুব কেঁদেছি। আমার নিজেরও দুই সন্তান আছে যাদেরকে সবাই অক্ষম বা শারিরিক প্রতিবন্ধী বলে। আমার মন ভেঙ্গে গেছে এই বর্বরতার কথা শুনে। বার বার নিজের শিশুদের কথাই মনে হয়েছে আমার।’