২০১৫ সাল শেষে বিশ্বের ৩২০ কোটি মানুষের হাতে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেছে; যা সকলের দ্বারগোড়ায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে বড় অর্জন। যদিও বিশ্বের ৪১০ কোটি মানুষ এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের হাতে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছায়নি। সম্প্রতি শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়। খবর এএফপি।
গত রোববার ‘স্টেট অব কানেক্টিভিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফেসবুক। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ইন্টারনেট বিষয়ক দ্বিতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন।
সাম্প্রতিক ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ২০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে মূলত বাজেট সাশ্রয়ী ডাটা প্যাক এবং বৈশ্বিকভাবে মানুষের আয় বৃদ্ধির কারণে। বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষকে ইন্টারনেট সেবার বাইরে রেখে ডিজিটালকরণের সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। বাকিদের ইন্টারনেটের আওতায় আনতে তাই সহযোগিতা এবং ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। প্রথমত, আর্থিক সুযোগ সৃষ্টি ইতিবাচক উদ্যোগ হতে পারে; যা মানুষের ইন্টারনেট অ্যাকসেস নিশ্চিত করতে পারে।
বলা হচ্ছে, উন্নত বিশ্বের বড় একটি অংশের হাতেই ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল বিশ্বে এ চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইন্টারনেট ব্যবহারে পিছিয়ে আছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেশিরভাগ মানুষই। বিভিন্ন দেশের শহুরে অঞ্চলগুলোয় ইন্টারনেটে সংযুক্তি বেড়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে সংশ্লিষ্ট সেবা পৌঁছায়নি। ইন্টারনেট ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে অর্থের স্বচ্ছলতা। যে অঞ্চলের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বেশি, সেই সব অঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। আবার অনেক দেশে দেখা যায় যে, ইন্টারনেট ব্যবহারে পুরুষের চেয়ে নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্বের প্রায় শতকোটি মানুষের এখনো ইন্টারনেট সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই। মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে ইন্টারনেট সম্পর্কে অজ্ঞ রেখে অনলাইন তথ্য-উপাত্তের যে উপকারিতা তার সুফল পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে সকলের কাছে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইতিবাচক পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজন শুধু ইতিবাচক উদ্যোগের। উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বের বাকি জনসংখ্যাকে ইন্টারনেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা সম্ভব।
বর্তমানে ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধির যে প্রবণতা তাতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিবর্তন না আসলে ২০২০ সাল শেষেও বিশ্বের ৩০০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সেবার বাইরে থাকবে। আর এর বেশিরভাগই উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর। বণিকবার্তা।