ঢাকার গুলশানে ১লা জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর কূটনৈতিক জোন হিসেবে পরিচিত এলাকা গুলশান-বারিধারা-বনানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করতে নেয়া হয়েছিল নানা উদ্যোগ।
এজন্য তখন বিভিন্ন রাস্তায় গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় যে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিরসনে কর্তৃপক্ষ বুধবার থেকে ওই এলাকার দুটি রুটে এসি বাস এবং নতুন রিকশা সার্ভিস চালু করছে।
ফলে বুধবার থেকে আমূল বদলে যাচ্ছে ঢাকার কূটনৈতিক জোন হিসেবে পরিচিত গুলশান-বারিধারা-বনানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা।
১লা জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পরই, নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছিল তল্লাশি চৌকি, কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল চলাফেরায়, আর অনেক সড়কে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
এখন সেই নিরাপত্তা আরো বাড়াতে চায় কর্তৃপক্ষ। আর তারই অংশ হিসেবে ওই এলাকায় দুটি রুটে ২০টি এসি বাস এবং পাঁচশো নতুন রিকশা নামানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
আনিসুল হক বলেন, “এই রিকশাগুলোর চালকেরা নিজেদের শিফট শেষ হলে গুলশান-বারিধারা-বনানী ও নিকেতনের কমিউনিটি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করবে। এজন্য গুলশানে কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বারিধারায় ৫০জন এবং নিকেতনে ১১৫ জন কমিউনিটি পুলিশ ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে”।
বনানী মাঠ, কড়াইল বস্তি, শাহজাদপুর এবং নদ্দার বিভিন্ন গ্যারেজে রিকশার এই কাজগুলো চলছে।
পুরো বিষয়টির তদারক করছেন বনানীর কাউন্সিলর মোহাম্মদ মফিজুর রহমান।
তিনি বলছিলেন এই সার্ভিস চালু করতে সবাই সহযোগিতা করছে, সিটি কর্পোরেশনের তেমন কোনো খরচ হয়নি।
“গাড়ীগুলো দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি উনার কোম্পানি এবং এর ভাড়াও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া রিকশাগুলো রঙ করার জন্য গুলশান, বনানী ও নিকেতনের সোসাইটির পক্ষ থেকে সবাই প্রতি রিকশাওয়ালাকে এক হাজার টাকা করে দিচ্ছেন”-জানিয়েছেন বনানীর কাউন্সিলর মোহাম্মদ মফিজুর রহমান।
এই এলাকাকে ঘিরে নতুন এসব উদ্যোগ নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বাসিন্দাদের একজন যেমন এই জোনে নতুন বাস ও রিকশা সার্ভিসকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন যে গুলশান-বনানীতে সার্ভিস না থাকার কারণে এখানে যারা অফিস করে তাদের অনেকের সমস্যা হচ্ছে। গাড়ী পাচ্ছে না, হেঁটে হেঁটে অফিস আসতে হয়। সার্ভিস চালু হলে সমস্যাটা মিটবে”।
কিন্তু আরেকজনের মতে আবাসিক এলাকায় বাস চলাচল না করলেই বাসিন্দাদের জন্য ভালো।
তবে, নতুন নতুন সব উদ্যোগ আর কড়াকড়ির ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে- এর ফলে কূটনৈতিক জোন কি যুদ্ধাক্রান্ত দেশের মত কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত গ্রীন-জোনের মত এলাকায় পরিণত হতে যাচ্ছে?
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলছেন নতুন পরিবহন ব্যবস্থা কুটনৈতিক এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি যানজট নিরসন ও নগরবাসীর চলাচল সহজ করে তুলবে।