অনলাইন প্রতিবেদক, ২১ জুলাই ২০১৩:
দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক টানা দ্বিতীয় মাসের মতো সুদের হার ২.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে। ব্যাংকের তরফে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকগুলোর অকস্মাৎ প্রণোদনা প্রদান ও চীনে চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণেই এমনটা করতে হচ্ছে। দ্য ব্যাংক অব কোরিয়ার প্রত্যাশিত এই সিদ্ধান্ত বৈদেশিক মুদ্রার বহির্মুখী প্রবাহই নির্দেশ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকগুলো সম্পত্তি বিকিকিনির (অ্যাসেট পারচেজিং) পড়ন্ত বেলায় যখন বাজারে সস্তায় ডলারের জোগান (কোয়ানটিটেটিভ ইজিং) দিচ্ছে, তখন স্বভাবতই বিনিয়োগকারীরা উচ্চ লাভের আশায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছুটছেন।
কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি যখন প্রত্যাশা করা হচ্ছে তখন প্রত্যাশিত সময়ের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ডলার ছাড়া ও চীনের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান মন্দাদশায় সে প্রবৃদ্ধি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে কোরিয়ার বাজার উন্মুক্ত হওয়ার সময়ে বিনিয়োগকারীরা যখন পশ্চিমা বাজারের তুলনায় অধিক লাভের আশায় কোরিয়ামুখী হচ্ছিল, তখন এই মানিটারি ইজিংয়ের কারনেই দক্ষিন কোরিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
এ বছরের মে’তে কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাত মাসে প্রথম বারের মতো সুদের হার কমায়। রপ্তানি বানিজ্যে মন্দাভাবের প্রভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়া এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিকে চাংগা করতে এমন সিদ্ধান্ত না নিয়ে উপায় ছিল না। গেল বছর কোরিয়ার রপ্তানি বানিজ্য ১.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উল্লেখ্য, কোরিয়ার রপ্তানি পণ্যের প্রধান গ্রাহক চীন। সেই চীনই যখন ইউরোপ-আমেরিকার নির্জীব বাজারের প্রভাবে ধুঁকছে, তখন তার বড় একটা ধাক্কা কোরিয়ার উপরও পড়াটা স্বাভাবিক। ফলস্বরূপ, ২০১২ সালে কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ জাতীয় উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ২ শতাংশ যা কিনা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
হাই ইনভেস্টমেন্ট এন্ড সিকিউরিটিসের অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ পার্ক স্যাং-হিউনের আশংকা, ব্যাংক অব কোরিয়াকে এই হার আবারও কমাতে হতে পারে যদি চীনের অর্থনৈতিক মন্দার পরিমাণ ধারনারও চেয়েও বেশী হয়ে থাকে।