Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিভক্ত হতে যাচ্ছে স্যামসাং

দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ইলেকট্রনিক জায়ান্ট স্যামসাংকে দুটি প্রতিষ্ঠানে ভাগ করার চিন্তাভাবনা চলছে। এ বিভক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাক্টিভিস্ট হেজ ফান্ড প্রতিষ্ঠান ইলিয়ট ম্যানেজমেন্টের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে। বিভক্তীকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন ব্যবসার ওপর স্যামসাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা লি পরিবারের নিয়ন্ত্রণ আরো দৃঢ় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বেনামি এক সূত্রের বরাতে স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যম গতকাল এ তথ্য জানায়। খবর রয়টার্স।

base_1480346321-pm

chardike-ad

শেয়ারহোল্ডার ভ্যালু সম্প্রসারণের জন্য চলতি বছরের অক্টোবরে স্যামসাংকে দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠানে বিভক্ত করার প্রস্তাবনা দেয় ইলিয়ট ম্যানেজমেন্ট। এ বিষয়ে আজই প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড অব ডিরেক্টরসের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। অন্যদিকে এ বিষয়ের সত্যতা জানতে চেয়ে স্যামসাংয়ের কাছ থেকে দ্রুত জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে কোরিয়ান এক্সচেঞ্জও। যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।

স্যামসাংয়ে বিভক্তীকরণের প্রস্তাব উত্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান ইলিয়ট ম্যানেজমেন্টের শেয়ার মালিকানা রয়েছে দশমিক ৬ শতাংশ। হেজ ফান্ড প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী বিভক্তীকরণ সম্পন্ন হলে দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি স্বত্বাধিকারী ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে এবং অন্যটি পরিচালনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালাবে। এ বিভক্তীকরণের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে বিশেষ লভ্যাংশ হিসেবে পরিশোধ করতে হবে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের তরল মুদ্রাপ্রবাহের ৭৫ শতাংশ ফেরত ও পরিচালনা পর্ষদে নতুন কয়েকজন স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দিতে হতে পারে প্রতিষ্ঠানটিকে।

বর্তমানে স্যামসাংয়ের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন বিভাগ। প্রতিষ্ঠানটিকে বিভক্ত করা হলে বিভাগটির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি লি পরিবারের হাতে চলে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

স্যামসাংয়ের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার খবর প্রকাশের পর লি পরিবার বা স্যামসাং গ্রুপের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। স্যামসাংয়ের ভাইস চেয়ারম্যান জায়ে ওয়াই লি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষপর্যায়ে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বেশ জোরালো হয়ে ওঠে। জায়ে ওয়াই লির পিতা লি কুন-হি এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও বর্তমানে তিনি যেকোনো কার্যক্রম পরিচালনায় অক্ষম। ২০১৪ সালে লি কুন-হির হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই কার্যত জায়ে ওয়াই লিই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষতম অবস্থানে রয়েছেন।

এর আগে ২০১৫ সালে এক মার্জার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রাতিষ্ঠানিক অপ্রধান সম্পদ বিক্রি করে দেয় স্যামসাং। ওই সময়ে জায়ে ওয়াই লি ও তার দুই বোনের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে নেয় স্যামসাং। ধারণা করা হয়, স্যামসাংয়ের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরো দৃঢ় করে তুলতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছিল লি পরিবার।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। সিউলভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এইচআই ইনভেস্টমেন্টসের সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এখন পর্যন্ত স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে বিভক্তীকরণের সময় বা এ ধরনের বিস্তারিত তথ্যসংবলিত কোনো বক্তব্য আসেনি। তবে এটুকু ধারণা করা যায়, যুুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে শিগগিরই একটি বিবৃতি প্রকাশ করতে যাচ্ছে স্যামসাং।’

অন্যদিকে সিঙ্গাপুরভিত্তিক অ্যাবারডিন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এশিয়ার করপোরেট গভর্ন্যান্স বিভাগের প্রধান ডেভিড স্মিথ বলেন, ‘এ মুহূর্তে ইলিয়টের প্রস্তাবনার বিপক্ষে যুক্তি দাঁড় করানো বেশ কঠিন। কারণ শেয়ারহোল্ডারদের পুরো অর্থই পরিশোধ করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে স্যামসাং। অন্যদিকে বিভক্তীকরণের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যতটা সরল হয়, প্রতিষ্ঠানটির জন্য তা ততটাই মঙ্গলজনক।’ বণিকবার্তা।