মার্কিন চিপ নির্মাতা কোয়ালকমকে প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করায় ৮৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যান্টি-ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কোরিয়া ফেয়ার ট্রেড কমিশন (কেএফটিসি)। পেটেন্ট লাইসেন্সিং ও মডেম চিপ বিক্রির ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়িক অনুশীলনের কারণে, জরিমানা করা হয়েছে। কোয়ালকমের পক্ষ থেকে জরিমানার বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।
মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কোয়ালকমের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হলো ওয়্যারলেস লাইসেন্সিং। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে বিক্রয় প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে এ ব্যবসা নিয়ে চাপে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার এ ব্যবসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় জরিমানার মুখে পড়ল। দেশটিতে এটিই সবচেয়ে বড় জরিমানার ঘটনা।
কেএফটিসির পক্ষ থেকে গতকাল বলা হয়, কোয়ালকম বাজারে তাদের প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করেছে। কোম্পানিটি অন্যায়ভাবে হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারীদের অপ্রয়োজনীয় কিছু পেটেন্টের জন্য রয়্যালটি প্রদানে বাধ্য করেছে। কোয়ালকমের মডেম চিপ বিক্রির অংশ হিসেবে এ রয়্যালটি নেয়া হয়।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির মডেম চিপের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরিহার্য পেটেন্ট স্ট্যান্ডার্ড লাইসেন্সিং সীমিত করা বা সীমাবদ্ধ প্রতিযোগিতা বর্জন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ফলে ইন্টেল, স্যামসাং ও মিডিয়াটেকের মতো চিপ নির্মাতারা পণ্য বিক্রিতে বাধার মুখে পড়ছে।
২০১৪ সাল থেকে কোয়ালকমের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে কেএফটিসি। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় জরিমানার কারণে অ্যাপল, স্যামসাং, ইন্টেল ও হুয়াওয়ের মতো কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কোয়ালকমের চুক্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
কেএফটিসির মহাসচিব শিন ইয়াং জানান, অ্যাপল, ইন্টেল, মিডিয়াটেক, হুয়াওয়েসহ অন্যান্য বিদেশী প্রতিষ্ঠান তদন্তের সময় তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় তদন্ত করেছি এবং এমন কার্যক্রমের জন্য জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ কোয়ালকমের ব্যবসায়িক অনুশীলন সার্বিকভাবে বাজার প্রতিযোগিতা সীমিত করেছে।
বিবৃতিতে কোয়ালকম জানায়, শিগগিরই তারা সিউল হাইকোর্টে জরিমানার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নথি জমা দেবে এবং সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
২০১৫ সালে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক এ ধরনের জরিমানার মুখে পড়েছিল কোয়ালকম। সে সময় প্রতিষ্ঠানটিকে ৯৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল। একই বছরের শেষ দিকে ইউরোপে কোয়ালকমের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠে।