উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চলমান উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপের নানা দিক বিবেচনা করতে শুরু করেছে। পরমাণু যুদ্ধ শুরু হলে মানবিক ক্ষয়ক্ষতি কী হতে পারে তাও খতিয়ে দেখছেন তারা। তবে এসবের বাইরে এসে এ নিয়ে নতুন এক হিসাব জানালেন একজন বিশেষজ্ঞ।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক লিওনিদ পেট্রভ জানান, উত্তর কোরিয়ায় কিম জং-উন শাসনের পতন হলে তিনি চীন, রাশিয়া বা দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশে শরণার্থী হিসেবে হয়তো যাবেন। আর এর সম্ভাব্য পরিণতি হবে দুই কোরিয়ার পুনরায় একত্রীকরণ। ২০০৮ সালে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনাও হয়েছিল।
তবে কাজটা খুব সহজ হবে না বলে মনে করেন এই গবেষক। তার মতে, এতে খরচ পড়বে প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার। আর সময় লাগবে কমপক্ষে এক দশক।
লিওনিদ বলেন, ‘দুই দেশই একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা আলাদা ভাষায় কথা বলে এবং আলাদা দৃষ্টিকোন থেকে পৃথিবীকে দেখে।’ এমনকি দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিবেশি দেশটির বৈষম্য করতে পারে ও তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তার ভাষায়, ‘এমন দরিদ্র, আগ্রাসী, স্বল্পশিক্ষিত ভাইয়ের দরকার নেই দক্ষিণ কোরিয়ার।’ বর্তমানে অবশ্য দক্ষিণের অর্থনীতিও সংকটে আছে। পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানির একত্রিকরণের সঙ্গে এশিয়ার এই দুই রাষ্ট্রকে মেলাতে রাজি নন অস্ট্রেলীয় এই গবেষক।
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়ার একের পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় বর্তমানে দেশটির সঙ্গে উত্তেজনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের।মার্কিন প্রশাসন মনে করছে, পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে হামলা চালাতেই আন্তর্জাতিক আইন ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শপথের পর থেকে উত্তর কোরিয়াও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে এ দাবির পক্ষে রসদ জুগিয়েছে।
চীন উত্তর কোরিয়াকে দমনে সহায়তা না করলে প্রয়োজনে একাই সামরিক হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে এ পরিকল্পনায় সায় দেননি মার্কিন সিনেটররা। আগাম হামলা হলে পিয়ংইয়ং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কায় দুপক্ষকেই সতর্ক করেছে চীন ও রাশিয়া।