Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দশ বছর বয়সেই চালক, হেল্পারের বয়স আট!

leguna-service-in-dhakaরাজধানীর মিরপুর-২ থেকে মহাখালীর রুটের লেগুনা। গাড়ির সহকারীর বয়স আট কি নয় এবং চালকের বয়স দশ বছর। গাড়িতে যথেষ্ট সংখ্যক যাত্রী বসে গেলে পেছন থেকে হাক আসে, ‘ওস্তাদ, টান দ্যান গাড়ি ভইরা গেছে।’ দশ বছরের শিশুটি যখন দুরন্ত গতিতে টেনে চলেছে গাড়ি, আতঙ্ক তখন যাত্রীদের মনে।

লেগুনা চালক রবেল হোসেনের বয়স ১০ বছর। সে এখন রীতিমতো গাড়ি চালায়। লেগুনা চালকদের নিয়ম মতে একদিন পর পর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে শিশুটি। এভাবে মাসে ১৫ থেকে ২০ দিন গাড়ি চালায় সে।

chardike-ad

রুবেল বলে, ‘সকাল থেকে গাড়ি চালাই। সারাদিনে হাজার চারেক টাকা আয় হয়। আমার রেট ৮০০ টাকা। কিন্তু মাঝে মধ্যে ৬০০-৭০০ টাকাও নেই। একদিন চালালে পরের দিন বন্ধ। বন্ধের দিন শুধু ঘুমাই।’

রুবেলের চেহারা ও শরীরে দারিদ্রের ছাপ, শীর্ণকায় দেহ, তামাটে চামড়া। অনেক পরিশ্রমে মুখের বুলি কমে গেছে শিশুটির। এই ছেলেটা সমাজের এমন আরও বহু শিশু শ্রমিকের প্রতীক।

লেগুনার সহকারী শিশু রাজু বলে, ‘ওস্তাদ খুব ভালো চালায়। দুর্ঘটনার কোন আশঙ্কা নেই।’

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এর খসড়া অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাশ হতে হবে। আর গাড়ি চালকের বয়স গবে নূন্যতম ১৮ বছর, পেশাদার চালকের ক্ষেত্রে তা ২১ বছর।

দুই বছর ধরে গাড়ি চালাচ্ছে রুবেল। প্রথম বছরে হেল্পারি করেই দ্বিতীয় বছরে হাত পাকিয়ে ফেলেছে স্টিয়ারিংয়ে। কিন্তু এতো ছোট বয়সে গাড়ি চালালেও পুলিশ কি করছে! উত্তরটা দেয় চালক রুবেল, ‘বহু মামলা হয়েছে। মহাখালীর আশেপাশেই ধরা খেয়েছি বেশি। কিন্তু এসবে কিছু হয় না। টাকা পেলেই ছেড়ে দেয়।’

সবশেষে রুবেল বললো সবচেয়ে আতঙ্কজনক কথা, ‘লেগুনায় সবোর্চ্চ ৭০ এর মতো গতি তুলেছি। গাড়ি যতো জোড়ে টানা যায় ততোই মজা। কিন্তু দেশের সব রাস্তায় অনেক যানজট। তাই আস্তে চালাতে হয়। এখন ঢাকার লেগুনার স্টিয়ারিং তো আমাদের পোলাপাইনদের নেতৃত্বেই!’