haynaআফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার প্রাচীন শহর হারার এর তরুণ বাসিন্দা আব্বাস ইউসুফ। তবে স্থানীয়রা তাকে চেনেন হায়না মানব হিসেবেই। কারণ গত ১৩ বছর ধরে তিনি প্রতি রাতেই হায়নাদের খাবার খাওয়ান। অভ্যাস মতো পৃথিবীর এই হিংস্রতম প্রাণীর একটি দল খাবার খেতে আসে আব্বাস ইউসুফের কাছে।

শুধু তাই নয় তার শোবার ঘরেও হায়না থাকে প্রতি রাতে। খেতে আসা হায়নাগুলোর একটি করে নামও দিয়েছেন তিনি। দাবোচ্চি বা চুলো বলে ডাকলেই দলের লোমশ হায়নাটি ছুটে আসে তার কাছে। তুকান দিল্লি নামে ডাকলেই সবচেয়ে অলস হায়নাটি হেলে দুলে সময় নিয়ে আসে ইউসুফের কাছে। আর কোয়ান্না নামে ডাকলে চামড়া ওঠা বয়স্ক হায়নাটি সাড়া দেয় ইউসুফের ডাকে। তারপর আব্বাসের মুখ থেকেই মাংসের টুকরো খেয়ে যায় তারা।

chardike-ad

আব্বাস ইউসুফ জানান, প্রায় ৪৫ বছর আগে তার বাবা ইউসুফ মুমে সালেহ হায়নাদের খাবার খাওয়ানো শুরু করেন। এরপর থেকেই প্রতি রাতে তার দল বেঁধে আসে শহরের ওই নির্ধারিত স্থানে।

রয়টার্সের খবর অনুসারে, এভাবে হায়েনাদের খাওয়ার ফলে ওই শহরের কেউই আর হায়েনার আক্রমনের শিকার হন না। বরং হায়েনাগুলো এখন শহরের বাসন্দাদের সঙ্গে পোষা কুকুর কিংবা বেড়ালের মতোই আচরণ করে। খাবার খাওয়ানোর সময় তারা ইউসুফের ঘাড়ে, কোলে উঠে বসে।

আব্বাস ইউসুফ বলেন, কেউ যদি হায়নার বাচ্চাদের কোনো ক্ষতি না করে তবে তারা সহিংস হয়না। মানুষের কোনো ক্ষতি তারা করে না।

হায়নাকে নিয়মিত খাওয়ানোর বিষয়টিকে ইউসুফ দেখেন ঈশ্বরের বিশেষ কৃপা হিসেবে। তার মতে ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই হায়নার সঙ্গে তার পরিবারের বন্ধুত্ব হয়েছে।

এদিকে ইথিওপিয়ার ওই শহরের প্রাচীন মসজিদ দেখতে আসা পর্যটকদের কাছে এখন অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউসুফের হায়নাকে খাওয়ানোর দৃশ্য। অনেক পর্যটক সাহস নিয়ে তার সঙ্গে খেতে দিচ্ছেন বুনো জন্তুগুলোকে।

আব্বাস জানান, তার শোবার ঘরে একটি বাচ্ছা হায়না প্রতি রাতেই তার সঙ্গে থাকে। তবে সেটি কখনও তাকে কামড়ে দেয় না বা তিনিও কামড় খাওয়ার ভয় পান না। অর্থসূচক