indian-army২০১৩ সালে ভারতের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজির) প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভারতের ভাণ্ডারে যে পরিমাণ গোলা-বারুদ মজুত রয়েছে,তা দিয়ে ১০ দিনও যুদ্ধ করা যাবে না। চার বছর পর সিএজির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতদিনেও ভারতের অস্ত্র ভাণ্ডারের তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারী দেশটির সমর শক্তি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

দেশটির সংবাদ মাধ্যম প্রশ্ন তুলছে, ইসরাইল, রাশিয়া, আমেরিকার মতো দেশগুলোর কাছ থেকে ভারত প্রতি বছর কোনো না কোনো অস্ত্রচুক্তি করছে। প্রতিরক্ষা খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে অস্ত্রভাণ্ডারকে মজবুত করছে। কিন্তু সত্যি যুদ্ধ হলে তার জন্য কতটা প্রস্তুত ভারতীয় সেনাবাহিনী?

chardike-ad

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে প্রায় সময়েই ভারতের বিরোধ তৈরি হয়। সম্প্রতি চীনের সঙ্গে নতুন করে বিরোধ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ভারতের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে সিএজির প্রতিবেদনটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সাধারণত পুরোপুরি যুদ্ধের জন্য কোনো দেশের নূন্যতম ৪০ দিনের গোলাবারুদ মজুদ থাকা প্রয়োজন। একে সামরিক পরিভাষায় ‘ওয়ার ওয়েস্টেজ রিজার্ভ’ বা ডব্লিউডব্লিউআর বলা হয়।

সিএজির প্রতিবেদেন বলা হয়েছে,ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে যে ১৫২ ধরনের গোলা-বারুদ রয়েছে তার মাত্র ২০ শতাংশ (অর্থাৎ ৩০ ধরণের গোলাবারুদ) ৪০ দিনের যুদ্ধের মতো মজুদ আছে। বাকি ৮০ শতাংশ দিয়ে ৪০ দিন যুদ্ধ চালানোর সম্ভব নয়।

সম্পূর্ণ ১৫-২০ দিন যুদ্ধ করার মতো গোলাবারুদ মজুদ থাকাকে বলা হয় ‘মিনিমাম অ্যাকসেপ্টেবল রিস্ক লেভেল’ বা এমএআরএল। অর্থাত্ এর কম রসদ নিয়ে যুদ্ধে নামাটা খুবই ঝুঁকির।

সিএজির হিসাবে, ভারতীয় সেনার হাতে যে ১৫২ ধরণের গোলাবারুদ রয়েছে, তার ৫৫ শতাংশই এমএআরএল-এর নীচে। আর ৪০ শতাংশ গোলাবারুদ যে পরিমাণে রয়েছে তাতে ১০ দিনও পুরোদস্তুর যুদ্ধ চালানো সম্ভব নয়।

এছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে কামানের গোলাকে সক্রিয় করার ফিউজ মজুতের পরিমাণ মাত্র ১৭ শতাংশ। ফলে ফিউজের অভাবে কামানের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলার ৮৩ শতাংশই বাস্তবে অকেজো।

সিএজি বলছে, ২০১৩ সালে তারা জানিয়েছিল ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে থাকা গোলাবারুদ দিয়ে ১৫-২০ দিন যুদ্ধ করা সম্ভব বলে তারা জানিয়েছিল। কিন্তু গত চার বছরে এর কোনো উন্নতি হয়নি।

ওই প্রতিবেদনের পর তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ২০১৫ সালের মার্চের মধ্যে গোলাবারুদের মজুদ ডব্লিউডব্লিউআরের (৪০ দিনের যুদ্ধক্ষম) ৫০ শতাংশের বেশি কররা ২০১৯ সালের পুরো ঘাটতি মেটানোর পরিকল্পনা করেছিল।

কিন্তু সিএজির নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে এ পরিকল্পনার বিষয়ে সরকারের অনুমোদন সত্ত্বেও গোলাবারুদের মজুদের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়নি।