Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিউইয়র্ক পুলিশের লেফটেন্যান্ট হলেন বাংলাদেশের প্রিন্স আলম

princeমেধা বিকাশের জন্য ও মেধাকে কাজে লাগানোর দেশে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে অসংখ্য মেধাবী মুখ বিদেশে চলে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় পর্যন্ত কাজ করছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা। সেখানে তাদের অনন্য সব কীর্তির কথা আমরা জানতে পারি। অথচ, একটু সহযোগিতা পেলে দেশে থেকেই এসব কীর্তি গড়তে পারতেন তারা। সুযোগ নেই বিধায় এই আক্ষেপ চিরদিনের। সে যাই হোক, আমেরিকার নিউইয়র্ক পুলিশে একজন কৃতি বাংলাদেশি অফিসারের কীর্তির কথা বলা যাক।

বিশ্বের সেরা পুলিশ বাহিনীর অন্যতম নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে (এনওয়াইপিডি) দক্ষতার সঙ্গে সেবা দিয়ে চলেছেন প্রায় ৮ শতাধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে পদোন্নতি পেয়ে শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন পদেও দায়িত্ব পালন করছেন তারা। স্থানীয় সময় শুক্রবার লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশের পটুয়াখলীর কৃতি সন্তান এ কে এম প্রিন্স আলম। গত ১১ বছরের চাকরি জীবনে তিনি পুলিশ অফিসার থেকে সার্জেন্ট এবং সর্বশেষ লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি লাভ করলেন। তার বাবা এ কে এম শাহ আলম পেশায় একজন আইনজীবী। ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান প্রিন্স আলম।

chardike-ad

পদোন্নতির অনুষ্ঠানে স্বামীর সঙ্গে এসেছিলেন প্রিন্স আলমের স্ত্রী তানজিনা ইসলাম শর্মী। স্বামীর এই সাফল্যে তিনি দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক মেধাবী একজন কর্মকর্তা। আমি আমার স্বামীকে এনওয়াইপিডির আরও শীর্ষ পদে দেখতে চাই।’ এ জন্য তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন বলে জানান। তিনি মনে করেন, তার স্বামীর এই পদোন্নতি বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের।

প্রিন্স আলমসহ নিউইয়র্ক পুলিশে এ পর্যন্ত সাতজন বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট হলেন। এই পদে কর্মরত অন্য বাংলাদেশিরা হলেন লেফটেন্যান্ট মিলাদ খান, লেফটেন্যান্ট সুজাত খান, লেফটেন্যান্ট শামসুল হক, লেফটেন্যান্ট কারাম চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট খন্দকার আব্দুল্লাহ এবং লেফটেন্যান্ট নিয়ন চৌধুরী। উল্লেখ্য, লেফটেন্যান্ট নিউইয়র্ক পুলিশের শীর্ষস্থানীয় পদের একটি।

শুক্রবার সকালে নিউইয়র্ক পুলিশের সদর দপ্তর ওয়ান পুলিশ প্লাজা অডিটরিয়ামে আড়ম্বরপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে প্রিন্স আলমের হাতে পদোন্নতির সার্টিফিকেট তুলে দেন পুলিশ কমিশনার জেমস পি ও’নিল। এ সময় শীর্ষস্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়াও বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাপার ট্রাস্টি ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি জানান, নিউইয়র্ক পুলিশে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কর্মকর্তাদের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশিরা অনেক ভালো করছেন। ভবিষ্যতে এ ধারা আরও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জামিল সারোয়ার জনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান পুলিশ অফিসারদের সংগঠন ‘বাপা’ এরই মধ্যে নিউইয়র্ক পুলিশের দাপ্তরিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য পরম পাওয়া। এদিকে শুক্রবার দুপুরে আরেক অনুষ্ঠানে ডিটেকটিভ থেকে সার্জেন্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।

উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক পুলিশের প্রিসিঙ্কটসহ (থানা) বিভিন্ন বিশেষ শাখায় কর্মরত রয়েছেন দুই শতাধিক কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে সাতজন লেফটেন্যান্ট, ১৬ জন সার্জেন্ট এবং সাতজন ডিটেকটিভ রয়েছেন। এ ছাড়া ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন আরও ৬০০ সদস্য। বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষার আদলে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে অফিসার পদে নিউইয়র্ক পুলিশে নিয়োগ হয়। পরে প্রতিটি পদোন্নতিতে পুনরায় পরীক্ষা দিতে হয়।