উত্তর কোরিয়া এবার ডুবোজাহাজ-ভিত্তিক ব্যালিস্টিক মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ওই অঞ্চলের স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ চিত্রে এমনই আভাস মিলেছে। আর এ নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সম্পর্ক বিষয়ের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ জোসেফ বার্মুডেজ যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাষ্ট্র-কোরিয়া ইনস্টিটিউটের নর্থ ব্লগে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বলেছেন, স্যাটেলাইটের এই ছবিগুলো উত্তর কোরিয়া উপকূলে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালেস্টিক মিসাইলের (এসএলবিএম) পরীক্ষারই প্রস্তুতির আভাস দিচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং বাকযুদ্ধ চলছে। সবশেষ উত্তর কোরিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি গুয়ামে হামলা চালানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিলে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ধরনের কোনো উচ্চাভিলাস করে থাকলে সেজন্য পিয়ংইয়ংকে পস্তাতে হবে।
এই উত্তেজনার আগুনে আরও ঘি ঢাললো বিশেষজ্ঞ জোসেফ বার্মুডেজের প্রকাশ করা উত্তর কোরিয়ার মায়াং-ডো শিপইয়ার্ড ও ডুবোজাহাজের ঘাঁটিতে আইসিবিএম পরীক্ষা চালাতে সক্ষম সিনপো-ক্লাস সাবমেরিনের তৎপরতার ছবি।
ব্লগে বার্মুডেজ বলেন, উত্তর কোরিয়া সম্ভবত সাগরে নতুন ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা সম্ভবত ডুবোজাহাজ থেকে (ক্ষেপণাস্ত্র) উৎক্ষেপণের পদ্ধতির অগ্রগতি ঘটিয়েছে, অথবা পুকগুকসং-১ এর চেয়েও অগ্রসর কিছু বানাচ্ছে।
পুকগুকসং-১ হলো ডুবোজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এসএলবিএম)। গত বছরের ২৪ আগস্ট এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়। এটি জাপানের দিকে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যায় সাগরে পতিত হয়। সেসময় উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রশান্ত মহাসাগর-ভিত্তিক ওই ডুবোজাহাজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডের যেকোনো স্থানে আঘাত হানা যাবে।
বিশেষজ্ঞ বার্মুডেজ বলেন, উত্তর কোরিয়ার মায়াং-ডো শিপইয়ার্ড ও ডুবোজাহাজের ঘাঁটিতে সাম্প্রতিক প্রস্তুতি কার্যক্রম সেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তৎপরতার সঙ্গেই মিলে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষিত এসএলবিএম উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকিকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। যদি যুদ্ধ বেঁধে যায়, সেক্ষেত্রে বিরোধী শক্তি তাদের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালালে পিয়ংইয়ং এই এসএলবিএম দিয়েই চোরাগোপ্তা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারবে।
এই বিষয়ে অবশ্য উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র বা জাপান কেউই কিছু বলেনি। প্রথম আলো