Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রবৃদ্ধি অর্জনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে দ. কোরিয়ার অর্থনীতিতে: হিউন ও-সিউক

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩:

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান সূচকগুলো একটি দৃঢ় প্রবৃদ্ধির আভাস দিলেও রফতানিনির্ভর অর্থনীতিটির ঝুঁকি এখনো পুরোপুরি কাটেনি। মূলত আন্তর্জাতিক পরিবেশে অনিশ্চয়তা ও বেসরকারি খাতে তুলনামূলক কম প্রবৃদ্ধির কারণেই এ ঝুঁকি রয়েছে। ফলে আর্থিক বাজারে অস্থিতিশীলতা, শিল্পোত্পাদন ও রফতানি হ্রাসের কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন। গতকাল শুক্রবার সংসদে দেশটির অর্থমন্ত্রী হিউন ও-সিউক একথা জানান। এদিকে অর্থনীতির সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ব্যাংক অব কোরিয়া) বিওকে। খবর ইয়োনহাপ নিউজের।

chardike-ad

অর্থমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের বাহ্যিক ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রানীতি পরিবর্তনের ফলে আর্থিক ব্যবস্থায় কোনো অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবে তারা।
তিনি আরো বলেন, ‘নয় প্রান্তিক পরে এপ্রিল-জুন সময়ে আমাদের জিডিপি এক শতাংশের বেশি বেড়েছে। এ সময়ে তিন লাখের মতো নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থনীতির প্রধান নির্দেশকগুলোয় উন্নতি দেখা যাচ্ছে। তবে প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে বেসরকারি খাত সে তুলনায় পিছিয়ে আছে।’

imagesমে মাসে বাজেটের আকার আরো ১৭ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন উন বাড়িয়েছে সরকার। সরকারি ব্যয়ের সুফল দেখা গেছে অর্থনীতিতে। কিন্তু এর পরও যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক প্রণোদনা প্রত্যাহারের আশঙ্কাকে ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছেন সিউক। কারণ বর্তমানে উদীয়মান দেশগুলোর আর্থিক বাজারের অস্থিতিশীলতার পেছনে এটি অন্যতম একটি কারণ।

তবে আইনসভাকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত, বৈদেশিক মুদ্রার বড় রিজার্ভ ও স্বল্পমেয়াদি ঋণ তুলনামূলক কম হওয়ায় স্থিতিশীল থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক বাজার।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির প্রভাবে নিজেদের বাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার।
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ বাজেটের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে সরকার। রাজস্ব কমে যাওয়া ও অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেলেও অত্যাবশ্যক ব্যয়ে কার্পণ্য করবে না তারা। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষগুলোর কল্যাণ ব্যয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে তাদের শিক্ষাব্যয় কমাতে বড় বিনিয়োগ করবে সরকার। এছাড়া কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ছোট ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি সমর্থন দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

তিনি জানান, বছরের প্রথমার্ধে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ ট্রিলিয়ন উন কমে গেছে কর-রাজস্ব। দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতির অবস্থা আরো ভালো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজস্ব বেড়ে এ ঘাটতি চলতি বছরে ৭-৮ ট্রিলিয়ন উনে নেমে আসবে।

এদিকে সুদের হার ২ দশমিক ৫ শতাংশে স্থির রেখেছে বিওকে। অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশাও ছিল এমনই। প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সুদের হার আরো কমানোর সুযোগ আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির সামনে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রণোদনা কমে এলে এর প্রভাব মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়ায় সুদের হার আর কমানো হবে না বলে মনে করছেন এইচএসবিসির হংকংভিত্তিক অর্থনীতিবিদ রোনাল্ড ম্যান। তিনি বলেন, সহজ মুদ্রানীতির চক্রটি শেষ হয়ে এসেছে। আগামী বছরের শেষ দিকে বিশ্ব অর্থনীতি আরো ভালো অবস্থানে গেলে সুদের হার আরো শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়াতে পারে বিওকে।
বিভিন্ন মতামত জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকরাও অনেকে মনে করছেন, আগামী বছরের শেষ দিকে সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। অন্যদিকে ১৭-১৮ সেপ্টেম্বরের ফেড সভায় বন্ড ক্রয়ের মাসিক সর্বোচ্চ সীমা ১০ বিলিয়ন কমিয়ে ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হতে পারে বলেও মনে করছেন বেশির ভাগ উত্তরদাতা।

জুলাইয়ে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক ও শেয়ারবাজারে ৩ ট্রিলিয়ন উন বিনিয়োগ করেছে। বিক্রি করেছে ৫৩৬ বিলিয়ন উনের সিকিউরিটিজ।
বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি রফতানি আয়ও বেড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। আর্থিক খাতগুলো সুরক্ষিত রেখে প্রবৃদ্ধি বাড়ানো ও এর সুফল দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজটি এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজই হবে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য। বিওকের অনুমান, চলতি বছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৪ শতাংশ। সূত্রঃ বণিকবার্তা