ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক প্রথা আগামী ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সব ধর্মের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মুসলিমদের ১৪০০ বছর পুরনো এই প্রথাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেনি, বরং কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে বল ঠেলে দিয়েছে আদালত। আগামী ছ’মাসের মধ্যে সংসদকে মুসলিমদের বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত নয়া আইন পাস করানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ততদিন পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবে তিন তালাক প্রথা। এই ইস্যুতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বেঞ্চের অন্য চার বিচারপতির মতপার্থক্য হয়েছে বলে জানা গেছে। তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে প্রবল ঔৎসুক্য তৈরি হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি জেএস খেহরার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে খেহরার শিখ ধর্মাবলম্বী, বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ খ্রিস্টান, আরএফ নরিমান পার্সি সম্প্রদায়ের, বিচারপতি ইউইউ ললিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আর বিচারপতি আবদুল নাজির মুসলিম।
ইসলাম ধর্মে এক নিঃশ্বাসে তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে স্ত্রীকে ত্যাগ করতে পারেন স্বামী। এভাবে বিচ্ছেদ নেয়ার আগে স্ত্রীর মতামতটুকু পর্যন্ত জানতে চাওয়া হয় না। ১৪০০ বছর পুরনো এই প্রথা তুলে দিতে সম্প্রতি আদালতের দ্বারস্থ হন মুসলিম সমাজের মহিলারা। মোট ৭টি পিটিশন জমা পড়ে। আবেদনকারীদের মধ্যে এক মহিলাকে আবার তাঁর স্বামী হোয়াটসঅ্যাপে তালাক দিয়েছিলেন।
গত ১১ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত শীর্ষ আদালতে সেই আবেদনগুলির একটানা শুনানি চলে। মঙ্গলবার দুপুরে রায় দান হয়েছে। তিন তালাক প্রথা নিয়ে শুরু থেকেই আদালতের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল মুসলিম ল বোর্ড। বিবাহের সময় স্বামীকে দিয়ে মুচলেকার প্রস্তাবও দিয়েছিল তারা। কিন্তু তিন তালাক প্রথার জেরে মুসলিম মহিলাদের সম্মান রক্ষা হচ্ছে বলে তাদের বিরোধিতা করে এনডিএ সরকার।