kimউত্তর কোরিয়ার অনেক বাণিজ্যিক চ্যানেল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কিন্ত পিয়ংইয়ং এখনো অবৈধভাবে অস্ত্র বিক্রি করে চলেছে। দেশটির উপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ হচ্ছে। এর মধ্যেও জাপানের উপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে দেশটি।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল উত্তর কোরিয়ার টেক্সটাইল রপ্তানি ও জ্বালানি তেলের আদান-প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ করতে সম্প্রতি মার্কিন খসড়া প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। তবে এ প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় পিয়ংইয়ং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রকে এরজন্য সর্বোচ্চ ভোগান্তি পেতে হবে।

chardike-ad

এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্য হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা। কিন্তু কোনোভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়া থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না উত্তর কোরিয়াকে। তাইলে স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, দেশটির অর্থ যোগানদাতা কে? এবার তাহলে জেনে নিন-

অস্ত্র বিক্রি: গত বছর প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া আনক্রিপ্টেটেড সামরিক যোগাযোগ সরঞ্জাম, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং উপগ্রহ নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করে একটি লাভজনক ব্যবসা করছে।

গত গ্রীষ্মে মিশর ৩০,০০০ পিজি রকেট চালিত গ্রেনেড এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ বহনকারী উত্তর কোরিয়ার এটি জাহাজ আটকে দেয়।

স্টকহোম ইন্টরন্যাশনাল পিস রিসার্স ইন্সটিটিউটের আরেকটি পৃথক প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া ১৯৯৬-২০১৬ সালে ইরান, সিরিয়া, লিবিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করে প্রায় ৮০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে।

জবরদস্তিমূলক শ্রম: মার্কিন এক হিসাবে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়া বছরে এক লাখ নাগরিককে বিদেশে পাঠিয়ে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে।

২০১৫ সালে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশে পাঠানো অধিকাংশ শ্রমিক খনি, লগিং, টেক্সটাইল ও নির্মাণ শিল্পে কাজ করে। মানবাধিকার একটি সংস্থা বলছে, তাদের উপার্জিত যেকোনো অর্থ তারা সরাসরি দেশে পাঠিয়েছে।

‘ওপেন নর্থ কোরিয়া’ নামে সিউল ভিত্তিক একটি এনজিও জানায়, উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক আয় বছরে প্রায় ৯৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন ব্যাংক নোট জাল করে মুদ্রণের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন। অভিযোগ রয়েছে, উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিকরা বিদেশ ভ্রমণের সময় ইউরোপের দেশগুলোতে রাশিয়ার এজেন্টদের সাহায্য নিয়ে এসব মুদ্রা লেনদেন করে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্র জংগেং ইলবোতে ২০১৬ সালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সীমান্ত এলাকা ডেংডং এ দুইটি পৃথক ব্যাংকে উত্তর কোরিয়ার এক এজেন্ট ৫ মিলিয়ন সমমূল্যের মার্কিন জাল অর্থ ৩০ মিলিয়ন ইউয়ানে রূপান্তরের সময় চীনের কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয়। সূত্র বলছে সেই অর্থ ওই এজেন্ট গৃহে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ক্রয় করার পেছনে ব্যয় করার পরিকল্পনা করে। সেসব যন্ত্রপাতি দেশটির জনক কিম ইল সাং এর জন্মদিনে দেশটির নাগরিকদের উপহার হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল।

২০০৪ সালে প্রকাশিত বিবিসির এক খবরে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষজ্ঞরা উত্তর কোরিয়ার দলত্যাগকারী এক ব্যক্তির প্রদর্শনকৃত মার্কিন জাল অর্থের সত্যতা অস্বীকার করেন।

সাইবার অপরাধ: গত মার্চে প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সহযোগিতায় উত্তর কোরিয়ার কিছু হ্যাকার নিউ ইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভের বাংলাদেশের একাউন্ট থেকে প্রায় ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে। হ্যাকাররা সুইফট মেসেজিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম লঙ্ঘন করে।