Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের

de-cockমুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির দিনে বাংলাদেশের বোলাররা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে মাশরাফির দল ১-০তে পিছিয়ে রইলো। মুশফিকের সেঞ্চুরির বিপরীতে সেঞ্চুরি করেছেন স্বাগতিকদের দুই ওপেনার হাশিম আমলা আর কুইন্টন ডি কক।

বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৭৮ রান। জবাবে, ৪২.৫ ওভারে বিনা উইকেটে প্রোটিয়ারা জয়ের বন্দরে পৌঁছে।

chardike-ad

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের আগের সফরগুলো সুখকর হয়নি। স্বাগতিক দেশের বিপক্ষে তাদের মাটিতে কখনোই ৫০ ওভারের ম্যাচে জেতা হয়নি লাল-সবুজদের। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিকুর রহিম। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শুরুটাও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাজে হার। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভালে বাংলাদেশ সময় খেলাটি শুরু হয় দুপুর দুইটায়।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম ওডিআইতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শুরু থেকেই সতর্ক ব্যাট করছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডেতে খেলতে নামা লিটন প্রথমবার ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। ইনিংসের নবম ওভারের পঞ্চম বলে কেগিসো রাবাদার বলে ডু প্লেসিসের তালুবন্দি হন লিটন। ২৯ বলে চারটি বাউন্ডারিতে লিটন করেন ২১ রান। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে ইনিংসের ১৪তম ওভারে ডি ককের তালুবন্দি হন কায়েস। বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৩১ রান। তার ইনিংসে ছিল চারটি চার আর একটি ছক্কা।

ইনিংসের ২০তম ওভারে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিব ৫ হাজার ওয়ানডে রান স্পর্শ করেন। তার আগে তামিম ইকবাল এই কীর্তি স্পর্শ করেছিলেন। পাশাপাশি সনাথ জয়সুরিয়া, জ্যাক ক্যালিস, শহীদ আফ্রিদি আর আবদুর রাজ্জাকের মতো সাকিব ৫ হাজার ওয়ানডে রানের সাথে ২০০ উইকেটের পঞ্চম মালিক হন। ইনিংসের ২৬তম ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন সাকিব। দলীয় ১২৬ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরার আগে সাকিব করেন ২৯ রান। ইমরান তাহিরের বলে

হাশিম আমলার হাতে ধরা পড়ার আগে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ৪৫ বল মোকাবেলা করে দুটি বাউন্ডারির দেখা পান।
ইনিংসের ২৯তম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৭তম হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিক। ইনিংসের ৩৯তম ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রিটোরিয়াসের বলে মিলারের হাতে ধরা পড়ার আগে রিয়াদ করেন ২৭ বলে তিন চার আর একটি ছক্কায় ২৬ রান। দলীয় ১৯৫ রানের মাথায় বিদায় নেন রিয়াদ। বাংলাদেশ তাতে চতুর্থ উইকেট হারায়। দলীয় ২৩৭ রানের মাথায় রাবাদার বলে বিদায় নেন সাব্বির। বিদায়ের আগে তিনি ২১ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৯ রান করেন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে মুশফিক তার হাফ-সেঞ্চুরিকে শতকে নিয়ে যান। এটা তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।

ইনিংসের ৪৮তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন নাসির হোসেন। ৮ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১১ রান করে রাবাদার তৃতীয় শিকারে ফেরেন নাসির। দলীয় ২৫৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। মুশফিক ১১৬ বলে ১১টি চার আর ২টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ১১০ রান। অভিষিক্ত সাইফুদ্দিনের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। তার ১১ বলের ইনিংসে ছিল একটি করে চার ও ছক্কার মার। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার রাবাদা চারটি, প্রিটোরিয়াস দুটি আর ইমরান তাহির একটি করে উইকেট নেন।

টেস্টে বিশ্রামে থাকলেও ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলের সঙ্গী হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে চোটের কারণে প্রথম ওয়ানডে থেকে ছিটকে যান পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। একই কারণেছবি: হাশিম আমলা-মুশফিকুর রহিম-ডি কক খেলতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল। ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের। একাদশে ছিলেন না সৌম্য সরকার। প্রোটিয়াদের ড্যান প্যাটারসনের অভিষেক হয়। ১০০তম ওয়ানডে খেলতে নামেন ডেভিড মিলার।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবশ্য এটিই (২৭৮ রান) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপের সুপার এইটে গায়ানায় তুলেছিল ৮ উইকেটে ২৫১। টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ২৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সফরকারী বোলারদের কোনো সুযোগই দেননি প্রোটিয়া দুই ওপেনার ডি কক এবং হাশিম আমলা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। আর ২৬তম শতকের দেখা পান আমলা। দু’জন মিলে স্কোরকার্ডে তোলেন জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান। ডি কক ১৪৫ বলে ২১টি চার আর ২টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৬৮ রান। আর আমলা ১১২ বল মোকাবেলা করে ৮টি চারের সাহায্যে করেন অপরাজিত ১১০ রান।