Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রেমিটেন্স আকর্ষণে বাংলাদেশ সপ্তম

সিউল, ৫ অক্টোবর:

চলতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসী কর্মীরা ৪১৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠাবেন বলে ধারণা করছে বিশ্ব ব্যাংক, যার মধ্যে বাংলাদেশে আসবে আনুমানিক ১৫ শ’ কোটি ডলার। এই হিসাবে রেমিটেন্স আকর্ষণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের সপ্তম দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তানও একই পরিমাণ রেমিটেন্স পাবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের ধারণা।অভিবাসী অধিকার নিয়ে নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সম্মেলন উপলক্ষে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অভিবাসনের খরচ কমিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

chardike-ad

বিশ্ব ব্যাংকের মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফে বলা হয়েছে, চলতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসী আয়ের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৪১৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। আর ধনী দেশগুলোর আয় যোগ করলে ২০১৩ সালে বিশ্বে মোট ৫৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স হাতবদল হবে।

এর মধ্যে রেমিটেন্স টানার দিক দিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারত ও চীনের মোট প্রবাসী আয় দাঁড়াবে ১৩১ বিলিয়ন ডলার। তালিকার তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা ফিলিপাইন ২৬ বিলিয়ন, মেক্সিকো ২২ বিলিয়ন, নাইজেরিয়া ২১ বিলিয়ন ও মিশর ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করবে ২০১৩ সালে।

migration_brief_21_infograpকেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১ হাজার ৪৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে আসে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে লেনদেন ভারসম্য রক্ষার ক্ষেত্রে প্রবাসী আয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে বার্ষিক প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দেশগুলোর বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের সমান বা তার বেশি। আর ভারত প্রতি বছর তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে যে আয় করে তার চেয়ে বেশি ডলার দেশে পাঠন প্রবাসী ভারতীয়রা।

চলতি বছর ভারতের প্রবাসী আয় বেড়ে ৭১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে অভিবাসীর সংখ্যা ২৩ কোটি ২০ লাখ। রেমিটেন্স প্রবাহের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৬ সাল নাগাদ উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসী আয় বেড়ে ৫৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলো ছাড়া সারা বিশ্বেই রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ছে। তবে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন নিযে আন্তর্জাতিক পর্যাযে কড়াকড়ির কারণে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন। এছাড়া অভিবাসনের খরচও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি বড় সমস্যা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের একজন স্বল্পদক্ষ কর্মীকে কাজ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে হলে ১৯৩৫ থেকে ৩৮৭০ মার্কিন ডলার খরচ করতে হয়। আর সেখানে যাওয়ার পর তিনি আয় করেন মাসে গড়ে ২০০ ডলার। অর্থাৎ, একজন বাংলাদেশির ক্ষেত্রে অভিবাসন ব্যয় দাঁড়ায় মাথাপিছু জিডিপির আড়াই থেকে পাঁচগুণ এবং প্রবাসে তার ১৪ মাসের আয়ের সময়।
ইন্দোনিশিয়ার একজন কর্মীরা ক্ষেত্রে অভিবাসন ব্যয় হয় প্রবাসে তার পাঁচ মাসের আয় এবং একজন নেপালির ক্ষেত্রে ছয় মাসের বেতনের সমান।

গত মাসে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয় সংক্রান্ত দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উনিশশ নব্বইয়ের দশক থেকে ২০ বছরে বাংলাদেশিদের বিদেশে পাড়ি জমানোর হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চলতি ২০১৩ সালেই প্রায় ১৪ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী হয়েছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। এদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।

২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা বছরে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে, যেখানে ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এ হার ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ।

গত এক দশকে জীবিকার তাগিদে অথবা নিরাপত্তার জন্য সারা বিশ্বে মোট ২৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ২ শতাংশ। সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪.কম