Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যেভাবে আটক হয় ডিবির ৭ সদস্য

seven-db-police-arrestটেকনাফের ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর চীন এবং মায়ানমার থেকে কম্বল আমদানি করে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করেন। মঙ্গলবার দুপুরে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য তিনি কক্সবাজার শহরে গেলে সেখানে গোয়েন্দা পুলিশের সাতজন সদস্য জোর করে গাড়িতে নিয়ে যায়। খবর বিবিসির।

বিকেল নাগাদ আব্দুল গফুরের বড় ভাই এবং টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। মুক্তিপণের জন্য প্রথমে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হলেও শেষ পর্যন্ত ১৭ লাখ টাকায় রফা হয়। এমনটাই অভিযোগ করছেন মনিরুজ্জামান।

chardike-ad

রাত দেড়টার দিকে আটক ব্যবসায়ী আব্দুল গফুরকে সাথে নিয়ে টাকা সংগ্রহের জন্য ডিবির সাত সদস্য কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যায়। মনিরুজ্জামান বলছেন, ছোট ভাইকে ছাড়িয়ে আনার জন্য তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা হন্যে হয়ে টাকা খুঁজেছেন।

‘আমরা সাত ভাই। আমরা ব্যবসায়ী। আমি দিলাম, আমার ছোট ভাই দিল, আমার বড় ভাই দিল, আমার শাশুড়ি দিল, বৌ দিল- এভাবে কয়েকজন মিলে টাকা সংগ্রহ করছি আর কি,’ বলছিলেন মনিরুজ্জামান।

মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহ করার জন্য গোয়েন্দা পুলিশের দলটি যখন টেকনাফ যাচ্ছিল তখন মনিরুজ্জমান টেকনাফে একটি সেনা চেকপয়েন্টে গিয়ে সেনা সদস্যদের সহায়তা চান। কিন্তু সেখানকার সেনা সদস্যরা জানান যে গাড়িটি যে পথ দিয়ে যাবে সেটি তাদের আওতার মধ্যে নেই। সেনা সদস্যরা মনিরুজ্জামানকে আরেকটি চেকপোস্টে যাবার পরামর্শ দেন। সে চেকপোস্টে যাবার পর সেনা সদস্যরা বলেন, গাড়িটি যখন টাকা নিয়ে ফিরবে তখন যেন বিষয়টি তাদের অবহিত করা হয়।

যেসব চেকপোস্টে গিয়ে মনিরুজ্জামান সেনা সদস্যদের সহায়তা চেয়েছেন, সেগুলো স্থায়ী কোনো চেকপোস্ট নয়। সম্প্রতি রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর সেখানে সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয় এবং সেদিক দিয়ে যে কোনো গাড়ি চলাচলের সময় প্রয়োজন মনে করলে তারা তল্লাশি করতে পারেন।

ভোর চারটার দিকে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের গাড়িটি যখন টেকনাফ থেকে কক্সবাজার ফিরছিল তখন সেনা চেকপোস্টে টাকার বস্তাসহ ধরা পড়ে যায় তারা।

কক্সবাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না বলেও তারা অভিযোগ করেন।

কক্সবাজার জেলায় যেহেতু ইয়াবার চোরাচালান হয়, সেজন্য বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে ইয়াবা পাচারের নামে অনেককে আটক করার হুমকি দেয় গোয়েন্দা পুলিশের কিছু সদস্য। এমনটাই অভিযোগ করছেন কিছু ব্যবসায়ী।

ঘটনার শিকার ব্যবসায়ী আব্দুল গফুরকেও ইয়াবা চোরাচালানে ফাঁসিয়ে দেবার হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তার বড় ভাই মনিরুজ্জামান। তিনি বলছিলেন, ‘পুরা কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্টে ওদের সোর্স আছে। কারা সচ্ছল হিসেবে চলে ওদের নজর আছে। ইয়াবা হাতে দিয়ে বলে, টাকা দিবি নাকি জেলে যাবি?’

তবে পুলিশ বলছে, অনেক সময় ভুয়া গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে অনেক প্রতারক সে এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ কাজ করছে। এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সতর্ক আছে বলে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।