Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চীনের ‘জাদুর জাহাজ’

china-shipদক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত জলভাগে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে চীন- এ খবর আগেই জেনে গেছে বিশ্বের মানুষ। কিন্তু কীভাবে তা করা হচ্ছে, তা নিয়ে ছিল নানা অভিতম ও রহস্য। মনে হচ্ছে, এবার সেই রহস্যের ওপর থেকে পর্দা তুলে নিল চীন। তারা নবনির্মিতি এমন একটি জাহাজের কথা জানালো, মূলত যার মতো কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী অন্যান্য জাহাজ ব্যবহার করে এরই মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরিতে সফল হয়েছে দেশটি।

ড্রেজিংয়ের জন্য বিশেষভাবে তৈরী নতুন জাহাজটির নকশাকারী প্রতিষ্ঠান এর নাম দিয়েছে ‘ম্যাজিক্যাল আইল্যান্ড-মেকার’ বা ‘জাদুকরী দ্বীপ-নির্মাতা’। অনেকে আবার একে ‘জাদুর জাহাজ’-ও বলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন সফরের আগ মুহূর্তে জাহাজটি প্রকাশ্যে আনলো কর্তৃপক্ষ।

chardike-ad

অভিযোগ রয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত জলভাগে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে মালিকানার দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে চীন। কিন্তু একই জলসীমার মালিকানা দাবি করে থাকে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ান। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের বিরোধ জিইয়ে রয়েছে।

চীনের নবনির্মিত জাদুর জাহাজ সম্পর্কে কিছু তথ্য:

জাহাজটির নাম কী?- এর প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘তিয়ান কুন হাও’। তিয়ান কুন হাও হলো চীনের লোককাহিনির দৈত্যাকার মাছ, যা পাখিতে রূপান্তরিত হতে পারতো।

এটি কত বড় ও শক্তিশালী এটি?- এর দৈর্ঘ ১৪০ মিটার, বিমের প্রস্থ ২৮ মিটার। পানির ৩৫ মিটার গভীর থেকে বালু/কাকর/বালিমাটি তুলে ১৫ মিটার দূরে ছুঁড়ে ফেলতে পারে। এর নকশাকারী প্রতিষ্ঠান সিসিসিসি তিয়ানজিন ড্রেজিংয়ের দাবি, ড্রেজিংয়ের দিক থেকে চীনে তো অবশ্যই এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী জাহাজ এটি। প্রতি ঘণ্টায় ৬ হাজার ঘনমিটার বালি/কাকর উত্তোলন করতে পারে জাহাজটি, যা তিনটি আদর্শমানের সুইমিংপুলের সমান জায়গা।

এটি কী করতে পারে?- বালি, মাটি, কোরাল সবকিছুই ড্রেজিং করতে পারে এটি। সাগরতল থেকে যেকোনো কিছু কেটে উঠিয়ে আনতে পারে এবং তা ছেকে প্রায় ১৫ মিটার দূরে ছুঁড়ে দিতে পারে। এভাবে তা জমা হয়ে হয়ে তৈরি হয় কৃত্রিম দ্বীপ। তবে ২০১৩ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়া কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির কাজে এখন পর্যন্ত ছোট ছোট ড্রেজিং জাহাজ ব্যবহার করেছে চীন।

নতুন করে এতবড় ড্রেজিং জাহাজ তৈরির উদ্দেশ্য কী?- আলেক্স নিল নামে একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিতর্কিত জলভাগে নতুন কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির কাজে চীন এটি মোতায়েন করবে। তবে ট্রাম্পের সফরের আগে তিয়ান কুন হাওয়ের উদ্বোধন উদ্দেশ্যমূলক না হয়ে ঘটনার পরম্পরা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের একক মালিকানা দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প অনেকবার বলেছেন, এই সাগরে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মানবে না তারা। এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক জলভাগ।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন