Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চালের কেজি ৭০ টাকা

চাল নিয়ে ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার জন্য যত নিয়ম ও চালবাজি অব্যাহত রয়েছে। গত ছয় মাস যাবত পাইকারী বাজারে চালের দাম পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। কোনো কোনো সময় সরকারিভাবে চালের দাম কমানোর কথা বলা হলেও এ প্রভাব বাজারে পরিলক্ষিত হয়নি। : চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা। চালের দাম বাড়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে বার বার দাম কমার কথা বলা হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই।

যে হারে দাম বেড়েছে সে তুলনায় দাম কমেনি কিছুই বলে মনে করছেন ক্রেতারা। চালের মিল মালিকদের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিদের আলোচনা-সংলাপ সবই লোকদেখানো বলেও দাবি সাধারণ মানুষের। চালের দাম এতোটা বৃদ্ধি পেয়েছে যে, অনেকের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। চালের খুচরা বাজারে মিনিকেট ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৮-৭০ টাকা, ভারতীয় আটাশ চাল ৪৭ টাকা, দেশি আটাশ চাল ৫৪ টাকা এবং ভারতীয় মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকা, পাজাম ও লতা নিম্ন মানেরটা ৪৮ টাকা।

chardike-ad

লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বৃদ্ধির পর ২-৩ টাকা কমলেও আবারও বেড়েছে চালের দাম। ৩২ টাকা কেজির মোটা চালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ৫০-৫২ টাকায় পৌঁছেছে। সরকারের চাল ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়াতে নানা তৎপরতা নিলে কেজিতে ৩-৪ টাকা কমলেও বর্তমানে আবারও বেড়েছে চালের দাম। সরকারের নানা তৎপরতার কোনো প্রভাবই পড়েনি খুচরা বাজারে। সরকারিভাবে বারবার বলা হচ্ছে চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কিন্তু বাজারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সরাকারি পর্যায়ে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও উল্লেখ করার মতো সফলতা আসেনি। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা পাইকারী বাজারে কেজি প্রতি ৩/৪ টাকা কমালেও এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েনি বললেই চলে। : চালের আমদানি শুল্ক মূল্য ছিল ২৮ ভাগ। সেটা দুই ধাপে কমিয়ে ২ ভাগে আনা হয়। অথচ এর কোনো প্রভাই লক্ষ্য করা যায়নি। আমদানি শুল্ক কমানোর আনুপাতিক হারে চালের মূল্যতো কমেইনি। মোটা চলের দাম ৫২ থেকে ৫৫ টাকা হওয়ায় নিম্নবিত্তের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে। ঠিক এমনি সময় ব্যবসায়ীরা যাতে চাল আমদানি করে জনগণের কাছে সহনীয় মূল্যে বিক্রি করতে পারে সে জন্য শুল্ক কমানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে কিছু সরকারি দলের মুনাফাখোর চাল ব্যবসায়ী লাভবান হয়েছেন ঠিকই, সাধারণ মানুষ খুব বেশি লাভবান হতে পারেনি। এখনো মোটা চাল ৪৮ টাকা এবং চিকন চাল ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

যদিও সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ দাবি করেছেন চালের দাম ‘স্বাভাবিক’। মোটা চাল ৪০ টাকার বেশি এবং সরু চাল ৫৬ টাকার বেশি থাকার মধ্যে গতকাল রবিবার সংসদে বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি। : রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টিসিবির বাজার দরের তথ্যে দেখা যায়, গতকাল রবিবার ঢাকার বাজারে মোটা চালের সর্বনিম্ন দর ছিল ৪২ টাকা, সরু চালের সর্বনিম্ন দর ছিল ৫৬ টাকা। উন্নত মানের সরু চালের সর্বোচ্চ দর ছিল ৬৫ টাকা। কিন্তু বাস্তবে খুচরা বাজারের এর চেয়েও বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। কেবল চালের দামই নয় বাড়তির দিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। সবজির মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও বাজারে এর কোনো প্রভাব এখনো পড়েনি। সবজি বাজারে আগের মতই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি পণ্য। নতুন আলু ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, সিম ১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা প্রতি পিস, বাঁধা কপি ছোট ৩০ টাকা প্রতি পিস, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা প্রতি পিস, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, পুঁইশাক এক আঁটি ৩০ টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতিকেজি ২০০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা।

এছাড়া পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, আদা ৯০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা। মসলার দামও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে দ্বিগুণ। লবঙ্গ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা এবং হলুদ ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।