Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার মার্কিন সেনা

US army
দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার মার্কিন সেনা

বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার মার্কিন সেনার উপস্থিতি রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার কথিত আগ্রাসন মোকাবেলায় এসব সেনা সদস্যদের দেশটিতে পাঠানো হয়েছে বলে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে হামলা চালানোর মতো একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার কয়েকদিন পর প্রভাবশালী মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত মার্কিন সেনা পরিবারের সদস্যদের অবিলম্বে দেশটি ত্যাগ করা উচিত।

chardike-ad

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা যখন জোরদার হচ্ছে তখন গ্রাহাম এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর কোরিয়া তার ষষ্ঠ পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল।

রোববার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিবিএস’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মার্কিন সেনাদের স্ত্রী এবং তাদের সন্তানদের দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল ‘পাগলামি’। সেখানে কেবল সেনা সদস্যদেরই পাঠানো উচিত ছিল। আমি চাই মার্কিন সেনাদের পরিবার পরিজনদের দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানো বন্ধ করা হোক এবং সেখানে বসবাসরত নির্ভরশীলদের নিজ দেশে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা শুরু করা এখনই উপযুক্ত সময়।

২৩০ বিমান নিয়ে মহড়া দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের

কোরীয় উপদ্বীপে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এ যাবতকালের মধ্যে তাদের সর্ববৃহৎ যৌথ বিমান মহড়া সোমবার শুরু করেছে। এতে বিভিন্ন ধরণের প্রায় ২৩০ টি যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ একথা জানায়। খবর সিনহুয়ার।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর বরাত দিয়ে বলা হয়, যৌথ যুদ্ধাভিযান সক্ষমতা বাড়াতে সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ইউ.এস. সেভেনথ এয়ার ফোর্সের সাথে যৌথভাবে পরিচালিত হবে ভিজিল্যান্ট এসিই বিমান যুদ্ধ মহড়া।

এ দুই মিত্র দেশের মধ্যে এটি হচ্ছে এ যাবতকালের মধ্যে তাদের সর্ববৃহৎ যৌথ বিমান মহড়া। এতে ১২ হাজারের বেশী সৈন্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়া গত ২৯ নভেম্বর হোয়াসং-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে ব্যাপক এ বিমান মহড়া শুরু করা হলো। পিয়ংইয়ং জানায়, এটি একটি আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ক্ষেপণাস্ত্রটি নতুন করে তৈরী করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানায়, উত্তর কোরিয়ার উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় চার হাজার ৬শ’ কিলোমিটার উপর দিয়ে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। তারা আরো জানায়, পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আঘাত হানতেও সক্ষম।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার এ বিমান মহড়াকে কেন্দ্র করে কোরীয় উপদ্বীপ অঞ্চলে রোববার চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তর কোরিয়া এ মহড়াকে ‘সম্পূর্ণ উস্কানিমূলক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে এতে পারমাণবিক যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।

অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা

উত্তর কোরিয়ার মিলিটারি বর্তমান বিশ্বে খুবই শক্তিশালী হলেও পিছিয়ে নেই দক্ষিণ কোরিয়াও। উত্তর কোরিয়ার মতো পারমাণবিক শক্তি না থাকলেও সামরিক শক্তিতে বিশ্বের অন্যতম পরাক্রমশালী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত।

বিশ্বের অন্যতম এই পরাশক্তির সক্রিয় সেনা রয়েছে ছয় লাখ ৯০ হাজার, রিজার্ভ সৈন্য ২ কোটি ৯০ লাখ। আকাশপথ, জলপথ এবং স্থলপথে সুসজ্জিত দক্ষিণ কোরিয়ান সেনাবাহিনী বিশ্বের সেরা বাহিনীর তালিকায় ১১তম। দক্ষিণ কোরিয়া মিলিটারি শক্তিতে ২০১৭ সালে ১১ নম্বর র‍্যাঙ্কিংয়ে আছে। দেশটির পুরো মানবসম্পদই মিলিটারির শক্তি হিসেবে কাজ করে। দেশের প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে তাদের গড়ে তোলাই প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। প্রতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ার মিলিটারিতে যোগদান করে ৬ লাখ ৯০ হাজার।

সামরিক শক্তিতে দক্ষিণ কোরিয়া দারুণ সমৃদ্ধ। স্থলশক্তির মধ্যে অস্ত্রের ভাণ্ডারে রয়েছে মেইন ব্যাটেল ট্যাংকস। আছে দুই হাজার ৬৫৪টিসহ হালকা ট্যাংক এবং ট্যাংক ধ্বংসকারী সহায়ক যন্ত্র। এ ছাড়াও যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য সাঁজোয়া যান আছে দুই হাজার ৬৬০টি। বন্দুক আছে প্রায় দুই হাজার। টোওড আর্টিলারি ৫ হাজার ৩৭৪টি। এ ছাড়া মাল্টিপল রকেট লাঞ্চার সিস্টেম রয়েছে ২১৪টি। সার্ভিস ক্যাপাবেল এয়ারপোর্ট- ১১১টি

বিমান শক্তিতেও পিছিয়ে নেই দক্ষিণ কোরিয়া। মোট যুদ্ধবিমান ৪০৬টি। ফিক্সড উইং অ্যাটাক বিমান ৪৪৮টি, ট্রান্সপোর্ট বিমান ৩৪৮টি, প্রশিক্ষণ বিমান ২৭৩টি, হেলিকপ্টার ৭০৯টি, অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৮১টি। দেশটি নৌশক্তিতেও এগিয়ে। মোট নৌযান আছে ১৬৬টি।বিমান বহনকারী নৌযান ১টি, ফাইটার নৌযান ১৩টি, বিধ্বংসী নৌযান ১২টি, সাবমেরিন ১৫টি, কোস্টাল ডিফেন্স ক্রাফট ৭০টি, মাইন ওয়ারফেজ ১১টি, মেজর পোর্ট টার্মিনাল ৮টি, রেলওয়ে কাভারেজ ১০৩০২৯টি।