Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

শেখ হাসিনা ক্ষমা না চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ‘কল্পিত পাচারকৃত’ সম্পদের বর্ণনা এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ‘কল্পিত সম্পদ’ সর্ম্পকে যে, বক্তব্য দিয়েছেন তা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

chardike-ad

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এবং তার সন্তানের বিরুদ্ধে অলীক মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়া ও জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল করেন এ সব দুর্নীতির কল্পকাহিনীর মূল উদ্দেশ্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা এবং রাজনৈতিকভাবে তাকে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা মাত্র।

তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই এ সব কল্পিত তথ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভিত্তিহিন ও বানোয়াট। কল্পিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দায়িত্বশীল গণমাধ্যম স্বাভাবিকভাবেই তা প্রকাশ করেনি।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী কানাডা ভিত্তিক একটি কথিত টেভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে অপরিচত কয়েকটি অনলাইন মিথ্যা তথ্য রটিয়েছে, খালেদা জিয়া ও তার সন্তানরা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ সৌদি আরবের ‘আল আরাফা’ শপিংমল এবং কাতারের ‘তিনারাট’ বাণিজ্যিক ভবনে বিনিয়োগ করেছেন।

মির্জা ফখরুল দাবি করেন মূলধারার বেশির ভাগ গণমাধ্যমে এ মিথ্যা তথ্য প্রকাশিত হয়নি। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী শিষ্টাচার বিবর্জিত ও অশালীন ভাষায় গণমাধ্যমকে তিরস্কার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন বক্তব্য শুধু অশালীনই নয়, এটা বে-আইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তার দাবি, খালেদা জিয়া বা তার পরিবারের কারও বিরুদ্ধে বিদেশে সম্পদ পাচার অথবা বিনিয়োগের কোনো অভিযোগ আজ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের এবং শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার তন্ন তন্ন করে সারা বিশ্বে খোঁজ করেও আজ পর্যন্ত কোনো সম্পদের অস্তিত্ব পায়নি।

‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং সম্পদের কল্প কাহিনী তৈরি করে জোর করে গণমাধ্যমকে দিয়ে তা প্রচারের অপচেষ্টা শুধুমাত্র শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও দেউলিয়াপনাই প্রমাণ করে। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরণের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু রাজনীতিকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছ রাজনীতিবিদের সর্ম্পকে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করবে’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই এসব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত। প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে এ ধরণের মানহানিকর মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে আগামীতে এ ধরণের অশালীন, রুচি বিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভুত মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাঁচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল ছুঁড়বেন না। উন্নয়ন, মেগা প্রজেক্টের নামে যে মেগা লুট করছেন তা জনগণ জানেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর অনবিক শক্তি প্রকল্প, পায়রা বন্দর, এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভিওআইপি, স্যটেলাইট স্টেশন, প্রতিটি সেতু, সড়ক, মহাসড়ক, প্রতিটি আন্তর্জাতিক টেন্ডারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের যে অভিযোগ জনগণ তার হিসেব নিচ্ছে।

তিনি বলেন, এদেশের পত্র-পত্রিকা, বিদেশের পত্র-পত্রিকা আপনাদের দলের মন্ত্রী, নেতা ও পরিবারে সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন ডিসি, সিএটল বাফেলোসহ আমেরিকা ও কানাডাসহ ব্যায়বহুল শহরে কাদের সন্তান এবং পরিবারের সদস্যদের নামে বাড়ি ও সম্পদ কেনা হয়েছে তার হিসাব জনগণ রাখছে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক ও সুশিল সমাজের সদস্যদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। দেশকে, জাতিকে জিম্মি করে দুর্নীতির এ অভিযান আপনারাই চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের মুখে সুনীতি, সুশাসন, সততা শুধু বেমানান নয় হাস্যকর।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা বাধ্য হব।

সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতির দেয়ার সিদ্ধান্তকে নিন্দা জ্ঞাপন এবং অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ফিলিস্তিনিদের ন্যয্যদাবি মেনে নেয়ার দাবি জানান ফখরুল।