বাংলাদেশের ২১ বছর বয়সী তরুণী। তাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় মুম্বইয়ে ভাল বেতনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি দেয়ার জন্য। তার আত্মীয়রা তাকে উদ্বৃদ্ধ করেন। তারা বলেন, তারা একজন এজেন্টকে খুঁজে পেয়েছেন। তিনি তাকে মুম্বইয়ে নিয়ে ভাল কাজ দেবেন। বেতনও ভাল। তাই তাকে এ প্রস্তাবে রাজি হতে বলেন।
আত্মীয়দের উৎসাহে তিনি বাংলাদেশ থেকে একটি জাহাজে চড়ে বসেন। পৌঁছে যান কলকাতা। সেখান থেকে তিনি একটি ট্রেনে চড়ে সোজা পৌঁছে যান মুম্বই। সেদিনটি ছিল ২৩ শে জানুয়ারি। সেখানেই তাকে চিনে নেয় ওই এজেন্ট। তাকে জানায়, তার জন্য সিকিউরিটি গার্ডের একটি ভাল চাকরি যোগাড় করেছে সে। কিন্তু হায় দুর্ভাগা! এমন চাকরির পরিবর্তে তার ঠাঁই হয় গ্রান্ট রোডের এক পতিতালয়ে। সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণি বুঝতে পারেন কি ঘটেছে। তিনি বুঝতে পারেন যৌন ব্যবসার দালালদের অন্ধকার জগতে পা ফেলেছেন তিনি।
তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এর প্রতিবাদ করেন তিনি। এ জন্য তাকে একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হয়। নির্যাতন করা হয় পাঁচ দিন। তবে মানসিকভাবে কখনোই ভেঙে পড়েন নি তিনি। তিনি সুযোগ খুঁজতে থাকেন। ২৭ শে জানুয়ারি পঞ্চম দিনে ব্যস্ত সময়ে সবাই তখন ঘুমাচ্ছিল। এ সময়টাকে তিনি মুক্ত হওয়ার সময় হিসেবে বেছে নেন। তিনি নিজের কক্ষের জানালা খুলে ফেলেন। এর আগে তিনি এই জানালা খুলতে পারতেন না। জানালা খুলেই তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রথম তলায় রয়েছেন। তাই ওই জানালা দিয়ে বের হয়ে একটি পাইপ ধরে নিচে নেমে আসেন এবং ছুটে যান রাস্তায়।
রাস্তায় এমন কাউকে খুঁজতে থাকেন, যিনি তাকে সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে ভাষা একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশী ওই তরুণী শুধু বাংলায় কথা বলতে পারেন। হঠাৎ ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তার। একজন ট্যাক্সি ক্যাপ চালককে পেয়ে যান। তিনি বাংলায় কথা বলতে পারেন। তার কাছে সব খুলে বলেন বাংলাদেশী ওই তরুণী। সঙ্গে সঙ্গে ওই ট্যাক্সিক্যাব চালক তাকে নিয়ে যান ডিবি মার্গ পুলিশ স্টেশনে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই তরুণীটি পুলিশ স্টেশনে এলে আমরা তার কথা শুনি। শুনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা নিবন্ধিত করেছি। এর পর পরই আমরা দেহব্যবসার ওই আস্তানায় হানা দিই। কিন্তু ততক্ষণে সংশ্লিষ্টরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
ওদিকে বাংলাদেশী ওই তরুণী ভারতে পা রাখার পরই তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছে দেহ ব্যবসার ওই দালাল। জানা গেছে, ওই চক্রটির কাছে আরও অনেক মেয়ে একই রকমভাবে বন্দি আছে। ওদিকে বাংলাদেশী ওই তরুণীকে রাখা হয়েছে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
তথ্যসূত্র: ভারতের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ