Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কিত দেশে কর্মরত বিদেশীরা

সিউল, ২৫ নভেম্বর ২০১৩:

রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বিদেশীদের জন্য। পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশ ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, হংকংসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এ অবস্থায় দেশে কর্মরত বিদেশী কর্মকর্তারাও নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কের মধ্যে আছেন। বিদেশী কর্মকর্তারা দাফতরিক কাজ করছেন নিরাপত্তা প্রহরায়।

chardike-ad

untitled_23436খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী কর্মকর্তারা বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া দাফতরিক কাজে বের হচ্ছেন না। আর বিভিন্ন দূতাবাস থেকেও নিজ নিজ নাগরিকদের এমন নির্দেশনাই দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ক্রয়াদেশের জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পোশাক কারখানার কর্মকর্তাদের ছুটতে হচ্ছে হংকং, সিঙ্গাপুর, দুবাইসহ বিভিন্ন স্থানে। কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রেতারা বাংলা দেশে কম আসছেন।

ইউনাইটেড নেশনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইউনিডো) বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর জনটি স্মিথের সঙ্গে সম্প্রতি দেখা হয় বিজিএমইএর সহসভাপতি রিয়াজ বিন মাহমুদের। ওই সময় স্মিথের সঙ্গে ছিল একটি ওয়াকিটকি। সেটি সঙ্গে রাখার কারণ জানতে চাইলে স্মিথ বলেন, নিরাপত্তার জন্য ব্রিটিশ দূতাবাস থেকে সেটি তাকে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে বাসায় থেকে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কোথাও যেতে হলে তাকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, বিদেশী নাগরিকদের এ দেশে আসার ব্যাপারে দূতাবাস থেকে সতর্ক করা হয়েছে। হরতালের কারণে অন্য দেশের নাগরিকরা ঢাকায় চলাচল করতে ভীত বোধ করছেন।

জানা গেছে, পোশাকের ক্রয়াদেশ দিতে ক্রেতারা সাধারণত প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে বাংলাদেশেই বৈঠক করেন। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতার কারণে এখন তারা বাংলাদেশে না এসে ভিয়েতনাম কিংবা পাশের অন্য কোনো দেশে বৈঠক করার ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী।

এ প্রসঙ্গে রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো ওয়ালমার্টের সঙ্গে বৈঠক হলো ভিয়েতনামে। এটি সাধারণত বাংলাদেশেই হতো। মার্কিন এক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সোর্সিং ও ইথিক্যাল ট্রেডিং বিভাগের প্রধান ভিয়েতনাম, ভারত ও বাংলাদেশ ঘুরে আমাকে জানিয়েছে, ভারত ও ভিয়েতনামে নতুন নতুন কারখানা হচ্ছে বলে সেখানে পোশাক তৈরির সক্ষমতাও বাড়ছে।’

জানা যায়, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোয় এখন গ্রীষ্ম মৌসুমের পোশাকের কার্যাদেশ সংগ্রহ করার সময়। আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত ইউরোপ আমেরিকার ক্রেতারা পোশাকের কার্যাদেশ দেবেন। এরপর শুরু হবে পোশাক তৈরির কাজ। কিন্তু অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ দেশে আসতে পারছেন না ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ১৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতাদের সঙ্গে তা দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময় আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে তিনি যেতে পারেননি। আবার ক্রেতাদের আসতে বললে তারা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ দেখাচ্ছেন।

পোশাকের ক্রয়াদেশ দিতে বাংলাদেশে আসতে ক্রেতারা যখন ভীত, তখন গত শনিবার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের একটি প্রতিনিধি দলের ওপর রাজধানীতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ মনে করছে, এ ধরনের ঘটনার কারণে অন্য ক্রেতারাও বাংলাদেশে আসতে নিরুত্সাহিত হবেন।

বিকেএমইএর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান বলেন, বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পোশাক নেয়া একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এ দেশে তাদের অর্ডার ৬০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। আগামী নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা নতুন অর্ডার দিতে ভয় পাচ্ছে। শনিবার হামলার শিকার হওয়া ক্রেতা প্রতিনিধি দলটি এক বছরের জন্য অর্ডার দিতে এসে এক মাসের অর্ডার দিয়ে চলে গেছে।

জানা যায়, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও এ খাতে রফতানিতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও টানা হরতালের কারণে বিপাকে আছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। সূত্রঃ বণিকবার্তা।