Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

গুয়াংজুতে দিনব্যাপী বাংলা নববর্ষ উৎযাপন

boishakhবাঙ্গালী সংস্কৃতির অন্যতম অংশ হল পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে গত ১৫ এপ্রিল রবিবার গুয়াংজুর চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চোসান ইউনিভার্সিটি ও গুয়াংজু ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির (জিআইএসটি) বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ১৪২৫ এর পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে। বাহারি খাবার এবং ঐতিহ্যবাহি পোশাকে সজ্জিত বাঙ্গালীদের পদচারনায় মুখরিত অনুষ্ঠানস্থেলে সত্যি যেন পাওয়া গেল এক টুকরো বাংলাদেশ।

চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ অ্যান্ড গ্লোবাল হাব সেন্টারের মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিসহ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।

chardike-ad

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে গুয়াংজু ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ও চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর শিন গিওংগু, কোরিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন গুয়াংজুর সভাপতি কিম ইয়ে শুক, টপ অর্থপেডিক হসপিটালের স্বনামধন্য চিকিৎসক ডাক্তার ইয়ু বহ পাক, চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (গ্ল্যোবাল ডায়াসপোরা স্ট্যাডিজ) এলামনাই প্রেসিডেন্ট ম্যুং দং হু উপস্থিত ছিলেন।

boishakhচোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ বিষয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী মোঃআশরাফুল আলম এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সামনে পহেলা বৈশাখের নানা দিক তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি পহেলা বৈশাখ ও বাংলাদেশি সংস্কৃতির আগমন, ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তুলে ধরতে পহেলা বৈশাখ এর উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন চোসান ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের পি.এইচ.ডি শিক্ষার্থী মোঃ মারুফ খান।

সংস্কৃতি একটা দেশের অপরিহার্য অংশ বলে মন্তব্য করেন অতিথিবৃন্দ। বিদেশের মাটিতে বাংলাদিশ শিক্ষার্থীদের পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের প্রয়াসকে ভূয়সি প্রশংসা করেন। গবেষণার পাশাপাশি নিজ দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ধরে রাখতে এটি সত্যিইপ্রশংসনীয় ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বলে দাবি করেন। এছাড়াও তারা কোরিয়ান সংস্কৃতির কথা উল্লেখ্য করেন এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিলো বাঙালি ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবার পরিবেশন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সহযোগিতায় আয়োজন করেন হরেক পদের ভর্তা, বিখ্যাত ইলিশ ভাজা এবং পান্তা ভাত। খাবারের তালিকায় রস মালাই ছিলো অন্যতম আকর্ষণ। আগত অতিথিসহ সবাই একত্রে দুপুরের খাবার গ্রহন করেন। বাঙালি খাবারের বৈচিত্রতা ও স্বাদেবিদেশি অতিথিবৃন্দ অভিভূত হন। আগত বিদেশি অতিথিগণ বাঙালি খাবার এবং বাংলাদেশি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিকের প্রশংসা করেন।

boishakhঅনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চোসান ইউনিভার্সিটির রসায়ন বিভাগের পি এইচ ডি শিক্ষার্থী মোঃ হাসানুল বান্না এবং একই ইউনিভার্সিটির আইটি বিভাগের পি এইচ ডি শিক্ষার্থী আরিফা ফেরদৌসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। গান, কবিতা, অভিনয় এবং কৌতুকসহ মজার মজার সব খেলায় মেতে উঠেন উপস্থিত সকলে। অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথির পরিবেশিত কোরিয়ান গান সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে পহেলা বৈশাখ এর উপর কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট ড. মোঃ গোলাম হাফিজ শওকত সহ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।গোয়াংজু ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার ড. শামসুদ্দিন আহমেদ হাসনাত এর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী পালিত বৈশাখী অনুষ্ঠান।

লেকক: মোঃ হাসানুল বান্না, পি.এইচ.ডি শিক্ষার্থী, ফটোনিক ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস ল্যাবরেটরি, দক্ষিণ কোরিয়া।
ছবি কৃতজ্ঞতা: ড. শামসুদ্দিন আহমেদ হাসনাত ও তমাল খাঁন সাগর।