প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি : ভাইকে বাঁচাতে প্রাণ দিলেন বোন

fatemaনরসিংদীর শিবপুরে এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতদল ওই বাড়ির স্কুলছাত্রী ফাতেমা আক্তারকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় নিহত ফাতেমার মা রাজিয়া বেগম ও ভাই রায়হানকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।

গতকাল সোমবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার মুনসেফেরচর এলাকায় প্রবাসী মতিউর রহমানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাতেমা একই এলাকার মৃত শহীদুল হক গাজীর মেয়ে। সে স্থানীয় শাষপুর কাজী মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মৃত শহীদুল হক গাজীর তিন মেয়ে এক ছেলে। গত ১০ বছর আগে তিনি মারা যাওয়ার পর বাড়ির বড় মেয়ে শাহিনা বেগমের স্বামী প্রবাসী মতিউর রহমান তাঁদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেন। তাঁরা সবাই মতিউর রহমানের বাড়িতেই থাকতেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ২০-২৫ জনের একদল ডাকাত বাড়ির কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।

এ সময় বাড়ির লোকজনের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতদল এক ভরি স্বর্ণালংকার ও চারটি মোবাইল সেট নিয়ে চলে যাওয়ার সময় নিহত ফাতেমার ভাই রায়হান মিয়া এক ডাকাতকে ধরে ফেলে। এ সময় ডাকাতদলের অন্য সদস্যরা রায়হানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ভাইকে বাঁচাতে গেলে ফাতেমা আক্তারকেও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। এ ঘটনা দেখে মা রাজিয়া বেগম এগিয়ে আসলে তাঁকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাতেমাকে মৃত ঘোষণা করেন। মা রাজিয়া আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আর ভাই রায়হানকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় মনির হোসেন বলেন, ‘তাদের (ফাতেমা) আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। তারপরও কেন যে ডাকাতরা তাদের বাড়িতে হানা দিল?’

শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে। এ ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’