Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পিছিয়ে গেল মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ

malaysiaমালয়েশিয়া বিদেশি কর্মী নিয়োগ পিছিয়ে গেল। নতুন করে বিদেশি কর্মী নিয়োগে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে অনীহা প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়া। ফলে বাংলাদেশ, নেপালসহ অনান্য দেশ থেকে নতুন করে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া এক ধাপ পিছিয়ে গেল। তবে অবৈধ কর্মীদের সমস্যা মোকাবেলার গুরুত্ব দিচ্ছে দেশটির সরকার।

এদিকে ঢাকার ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির নামে এখনো মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মী। দেশটির সরকার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব কর্মী পাঠানোর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে শ্রমিক পাঠাতে না পারলে চাহিদাপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। বেঁধে দেয়া সময়ও শেষ হয়েছে শুক্রবার। এতে মালয়েশিয়ার এজেন্ট, অপেক্ষমাণ শ্রমিক, ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সি ও মধ্যস্বত্বভোগীসহ অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। যদিও অপেক্ষমাণ কর্মীরা যাতে দ্রুত দেশটিতে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনে জরুরি ভিত্তিতে ‘স্পেশাল সেল’ খোলা রয়েছে।

chardike-ad

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে বলেন, পাইপলাইনে আটকে থাকা এখনো ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এসব কর্মীর নামে কলিং ও মেডিকেলসহ সবকিছুই সম্পন্ন হয়েছে। তারপরও যেতে পারছেন না। এই সময়ের মধ্যে ঢাকার মালয়েশিয়ান হাইকমিশন থেকে ঠিকমতো স্ট্যাম্পিং দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডেটলাইনের আগেই গত মাসের ১৫-১৬ নভেম্বর থেকে স্ট্যাম্পিং বন্ধ রেখেছে মালয়েশিয়া হাই কমিশন। পাসপোর্টও জমা নিচ্ছে না। কী কারণে তারা জমা নেয়া বন্ধ করেছে সে বিষয় জানা যায়নি। তবে নতুন করে যদি মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে সময় বাড়িয়ে না নেয়া যায় তাহলে এসব কর্মীর যাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সিলর অতিরিক্ত সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম আজ (শনিবার) এ প্রতিবেদককে বলেন, যাদের কলিং হয়েছে এবং ভিসা স্ট্যাম্পিং হয়েছে- এসব কর্মী আসতে পারবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে।

উচ্চপর্যায়ের এসব বৈঠকে দুই দেশের কর্মকর্তারা এবার অল্প অভিবাসনব্যয়ে কর্মী নিয়োগের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এছাড়া সব রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো নিশ্চিত করা ও এজেন্সিগুলোর মানসম্পন্ন ট্রেনিং সেন্টার থাকা ছাড়াও শ্রমিক-সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন শুধু স্থগিত থাকা শ্রমবাজার নতুন করে চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শুধু দেয়া বাকি রয়েছে।

এদিকে নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের আগে দেশটিতে থাকা অবৈধ কর্মীদের সমস্যা মোকাবেলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকার। মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলসেগারান বলেন, বর্তমানে অবৈধ বিদেশি কর্মীদের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ চালু হতেপারে সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়।

মন্ত্রী বলেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং হংকংয়ের মতো দেশ যখন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে তখন তাদের শর্ত থাকে যে, কর্মী প্রেরণ করতে ইচ্ছুক দেশগুলোর সরকার তাদের অবৈধ কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে কঠোর অবস্থান নেবে।

তিনি উল্লেখ করেন, এখন আমরা যা বলছি তা খুবই সহজ, যদি আপনি আমার দেশে শ্রমিক পাঠান তবে আপনাকে অবশ্যই সেরা শ্রমিক পাঠাতে হবে, আপনাকে অবশ্যই নিয়মনিষ্ঠ লোক পাঠাতে হবে।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) ২৫তম আসিয়ান শ্রমমন্ত্রীদের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলছেন, আমরা যদি আরও একস্তর নিচে যাই, তাহলে বিশ্বের প্রধান দেশগুলো আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনবে। তখন দেশগুলো এই দেশে আর বিনিয়োগ করতে চাইবে না।

এছাড়া দেশটিতে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা সুরক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এটি মালয়েশিয়ার সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার (সোসো) অধীনে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় পরিমাণ কমাতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এটি বাস্তবায়ন হলে নিয়োগকর্তারা বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সচেষ্ট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ