Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

korea-boishakhউৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ পালন করেছে কোরিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত কোরিয়ার রাজধানী সিউল-এর সিটি হলে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘পহেলা বৈশাখ।’

লোকায়ত সংস্কৃতির ডালা সাজিয়ে বর্ণিল উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা বরণ করে নিয়েছে ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম-সহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা, পরিবারসহ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির ব্যক্তিরা, সমাজকর্মী, সামাজিক নেতারা, লেখক-সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।

chardike-ad

বাংলা নববর্ষের শুভারম্ভ বাংলাদেশ দূতাবাসের এমনি চমৎকার আয়োজনের মধ্য দিয়ে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে, বিশেষ করে দূতাবাসের বর্ণাঢ্য এবং আন্তরিক আনন্দ আয়োজনে। অনুষ্ঠানটির শুরুতেই বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম দূতাবাস পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুষ্ঠানে স্বাগতম জানান।

বাংলাদেশে অন্যতম উৎসব- বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখের উদযাপনের উপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। ১৪২৬ সালের শুভ সূচণায় তিনি সবার জন্য সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিউলস্থ মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্টের আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত লিম গৌণ হিউং ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

koreaসমস্ত আয়োজনজুড়ে ছিল বাংলা সংস্কৃতির প্রতিফলন, বৈশাখের প্রাণের ছোঁয়া, স্বদেশ প্রেমের স্পর্শ এবং কোরিয়া সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক সম্প্রীতির মিলনমেলা। এই আয়োজনে কোরিয়ান নাগরিকদেরসহ অন্যান্য দেশের কুটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানোর আরেক বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া।

আমাদের নান্দনিক সাংস্কৃতিক চর্চা তাদের সামনে তুলে ধরা। উল্লেখ না করলেই নয় যে বিভিন্ন দূতাবাসের পক্ষে থেকে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানে একটি ভিন্ন ব্যঞ্জনা, ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে এবারের আয়োজনে। কোরিয়াতে বাংলাদেশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও এই আয়োজনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে সাহায্য করেছে যেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

মঙ্গল শোভাযাত্রার ছিল পহেলা বৈশাখ-এর অনুষ্ঠানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত, এটা বৈশাখী উদযাপনের অন্যতম প্রধান ঐতিহ্যের প্রতিফলন এবং ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত হয়ে এখন তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে আগত ১০ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলের নাচ-গানের পরিবেশনা ছিল মনোমুগ্ধকর। আয়োজিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও কোরিয়ান শিল্পীদের পরিবেশনায় পুরো অনুষ্ঠানটিতে সাংস্কৃতিক বৈচিত্রময় পরিবেশনায় একটি মূল সুর হৃদয়ের গভীরে গুঞ্জরিত হয়েছে- সংস্কৃতি তা সে যে দেশের, যে জাতীরই হোক না কেন, তার আবেদন সর্বজনীন এবং সর্বজনীন সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়েই আমাদের মধ্য গড়ে উঠে এক সম্প্রীতির বন্ধন, আমরা অনুভব করি একাত্মতা এবং এর মধ্যেই বৃহতের আনন্দধারা বহমান। পান্তা-ইলিশ, বাঙালি ভর্তা ভাত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রাণবন্ত নববর্ষ উৎসব আয়োজন।

জুঁথি ইকরাম, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে