Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কোরিয়ান ভাষা ও বর্ণমালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

korean-languageআজ ৯ অক্টোবর। কোরিয়ান ভাষা দিবস। কোরিয়ান ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে কোরিয়ান ভাষা ও বর্ণমালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন মো. মহিবুল্লাহ।

সহস্রাব্দ প্রাচীন যে কয়টি ভাষা অধুনা পৃথিবীর বুকে সগৌরবে টিকে আছে কোরিয়ান ভাষা তাদের অন্যতম। সাড়ে সাত থেকে আট কোটি কোরীয় বংশোদ্ভূতর মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম এই ভাষা। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি দক্ষিণ কোরিয়া ও আড়াই কোটি উত্তর কোরিয়ার অধিবাসী। এদের বাইরে চীনে ২০ লক্ষ, যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লক্ষ এবং জাপানে ৫ লক্ষের মতো কোরিয়ানভাষী রয়েছেন। ভাষাভাষী জনসংখ্যার বিচারে পৃথিবীতে কোরিয়ান ভাষার অবস্থান ১২তম।

chardike-ad

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি: কোরিয়ান ভাষা দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার দাপ্তরিক ভাষা। উচ্চারণ, বর্ণমালা ও শব্দভাণ্ডারের কিছু তারতম্য বাদ দিলে উভয় দেশই কোরিয়ান ল্যাংগুয়েজ সোসাইটি কর্তৃক ১৯৩৩ সালে প্রণীত মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকে। এছাড়া চীনের দক্ষিণপূর্ব জিলিন প্রদেশের অন্তর্গত ইয়ানবিয়ান জেলার (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীনে থেকে যাওয়া কোরিয়ানদের স্বায়ত্তশাসিত একটি এলাকা) দুটি দাপ্তরিক ভাষার একটি কোরিয়ান ভাষা।

উৎপত্তি ও ইতিহাস: কোরিয়ান জাতির মতো কোরিয়ান ভাষারও উৎপত্তির ইতিহাস অদ্যবধি পণ্ডিতদের কাছে অনেকটাই রহস্য রয়ে গেছে। অধিকাংশ ঐতিহাসিক ভাষাবিদ কোরিয়ান ভাষাকে একটি সম্পূর্ণ মৌলিক ভাষা হিসেবে অভিহিত করেছেন। উনিশ শতকের পশ্চিমা পণ্ডিতগণ ইউরাল-আল্টাইক, জাপানীজ, চায়নিজ, তিব্বতিয়ান, দ্রাভিদিয়ান আইনু, ইন্দো-ইউরোপিয়ানসহ অনেক ভাষাগোষ্ঠীর সাথে কোরিয়ানের সম্পৃক্ততা দেখিয়েছেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতানুসারে কোরিয়ান ভাষা মঙ্গোলিয়ান, ফিনিশ, হাঙ্গেরিয়ান, তুর্কিসহ এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের অনেকগুলো ভাষার জনক ইউরাল-আল্টাইক ভাষাগোষ্ঠীর দূর সম্পর্কের আত্মীয়।

কোরিয়ান ভাষার ইতিহাসকে চারটি সময়কালে ভাগ করা যায়ঃ

১। আদিম যুগঃ- প্রথম শতাব্দী
২। প্রাচীন যুগঃ- প্রথম থেকে দশম শতাব্দী
৩। মধ্য যুগঃ- দশম থেকে ষোড়শ শতাব্দী
৪। আধুনিক যুগঃ- সপ্তদশ শতক থেকে বর্তমান পর্যন্ত

প্রথম শতাব্দীর প্রথমার্ধে কোরিয়া উপদ্বীপ ও দক্ষিণ মাঞ্চুরিয়া বেশ কয়টি উপজাতি রাজ্যে বিভক্ত ছিল। এসময় এ অঞ্চলে দুই প্রকার ভাষার ব্যুৎপত্তি ঘটে বলে ধারণা করা হয়। উত্তরাঞ্চলের ভু ইয় (Buyeo), ওক জ (Okjeo), দোং ইয়ে (Dongye) ও গোগুরিও (Goguryo) রাজ্যগুলোতে ভু ইয় (Puyo) নামক একটি ভাষাগোষ্ঠী এবং দক্ষিণাঞ্চলের শিলা (জিনহান), মাহান ও বেনহানে হান নামের আরেকটি ভাষাগোষ্ঠী গড়ে ওঠে। এ দুই গোষ্ঠীর এক বা একীভূত একাধিক ভাষার বিবর্তিত রূপই কালক্রমে কোরিয়ান নামে একক ভাষায় পরিণত হয়।

সপ্তম শতাব্দীতে শিলা রাজ্য উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেকটা এলাকা দখল করে নিলে শিলান এ অঞ্চলের প্রধান ভাষা হয়ে উঠতে শুরু করে। দশম শতকে কোরীয় সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তনকালে রাজধানী চলে আসে কেসংয়ে, এসময় কেসংয়ের ভাষা সমগ্র কোরিয়া উপদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। চতুর্দশ শতকের শেষভাগে চীনা দার্শনিক কনফুশিয়াস অনুসারী জোসন কোরিয়ার আধিপত্য দখলে নিলে রাজধানী সরে আসে সিউলে। তবে তা কেসং থেকে খুব বেশী দূরে না হওয়ায় এ সময়ে জাতীয় ভাষায় নতুন করে আর আঞ্চলিক প্রভাব পড়ে নি।

এভাবে সময়ে সময়ে কোরিয়ান ভাষার যে কয়টি আঞ্চলিক রূপ শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সিউল, খিয়ংসাং (Kyongsang), ঝল্লা (Cholla), হামখিয়ং (Hamgyong), ফিয়ংআন (P’yong’an), হোয়াংহে (Hwanghae) ও জেজু এলাকার ভাষা উল্লেখযোগ্য। আঞ্চলিক টান ও সামান্য কিছু শব্দ বাদ দিলে এদের মাঝে তেমন কোন পার্থক্য নেই বললেই চলে। তবে জেজু দ্বীপের ভাষায় মধ্যযুগীয় রূপের কিছুটা ভাব এখনও রয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের ভাষার সাথে আধুনিক কোরিয়ানের পার্থক্যটা বেশ ভালোভাবেই ধরা পড়ে।

বর্ণমালা: পঞ্চদশ শতকের আগ পর্যন্ত কোরিয়ান ভাষা হাঞ্জা নামক চীনা বর্ণমালা দিয়ে লেখা হতো। হাঞ্জা বর্ণমালায় কোন শব্দ লেখা যেতো না, কেবল বিভিন্ন ধারনার চিত্ররূপ দেয়া হতো। সমাজের অভিজাত শ্রেনীর উচ্চ শিক্ষিত লোকজন ছাড়া এ বর্ণমালা সাধারণ মানুষ লিখতে ও পড়তে পারতো না। এ বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জোসন যুগের চতুর্থ রাজা সেজং (১৪১৮ – ১৪৫০) সর্বস্তরের কোরিয়ানদের ব্যবহার উপযোগী একটি বর্ণমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেন।

তবে এমন উদ্যোগের জন্য সময়টা খুব সুবিধার ছিল না। শিক্ষিত সমাজের আভিজাত্য আর মর্যাদার বড়াইটা তখন খুব প্রকট। আমজনতা থেকে নিজেদের আলাদা রাখাটাই ছিল অভিজাতদের সবচেয়ে বড় ধ্যানজ্ঞান। ফলে সর্বসাধারণকে অক্ষরজ্ঞান প্রদানের পদক্ষেপটা তাঁরা খুব ভালোভাবে নেয় নি।

বাঁধা-বিপত্তি, আপত্তি উপেক্ষা করে ১৪৪০ সালে রাজা সেজং রয়্যাল সোসাইটির পণ্ডিতদের সরল ও সহজবোধ্য একটি নতুন বর্ণমালা প্রণয়নের দায়িত্ব দেন। প্রায় একশ ভাষাবিদের তিন বছরের প্রচেষ্টায় প্রণীত হয় কোরিয়ান ভাষার স্বতন্ত্র বর্ণমালা হুনমিন-ঝং উম (Hunmin-chongum)। মানুষের বাক-প্রত্যঙ্গ মুখ, জিহ্বা ও কণ্ঠনালীর উপর দীর্ঘ গবেষণা করে তাঁরা মোট ২৮ টি অক্ষর (১৭ টি ব্যঞ্জনবর্ণ ও ১১ টি স্বরবর্ণ) প্রস্তাব করেন। আরও তিন বছর আলোচনা-পর্যালোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্ডিতগণ ১৪৪৬ সালে বিস্তারিত ব্যাখ্যা, উদাহরণ ও পূর্ণ ব্যাকরণসহ হুনমিন-ঝং উম বর্ণমালা রাজার কাছে হস্তান্তর করেন। এ বছরের অক্টোবর মাসে রাজা সেজং কোরিয়ানদেরকে তাঁদের সম্পূর্ণ নিজস্ব বর্ণমালাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার দেন।

হুনমিন-ঝং উম‘র প্রচলন কোরিয়ায় রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে দিলো। যোগাযোগের মাধ্যমে শ্রেনী বৈষম্য, শিক্ষাদীক্ষায় উঁচু-নিচু ভেদাভেদ রাতারাতি ধুলোয় মিশে যেতে লাগলো। রাজা সেজংয়ের এই উদ্যোগ কথিত অভিজাতদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তী কয়েক শতক তাঁরা নিজেদের হাঞ্জা ভাষাতেই সাহিত্যচর্চা, পড়াশুনা চালিয়ে গেলেও ক্ষোভ, ঘৃণা, শ্রেষ্ঠত্ব হারানোর ভয় আর হতাশায় হুনমিন-ঝংউম কে “আবর্জনা” আখ্যা দিয়ে একে বিলুপ্ত করার চেষ্টাও কম করেন নি।

উনিশ শতকের শেষভাগে কোরিয়ায় জাতীয়তাবাদের হাওয়া প্রবলভাবে বইতে শুরু করে। এ সময় হুনমিন-ঝং উম -এর নতুন নাম হয় খুংমুন (জাতীয় বর্ণমালা)। সাহিত্যিক ভাষায় হাঞ্জার ব্যবহার ব্যাপকভাবে কমতে থাকে এবং খুংমুনে সাহিত্য চর্চা “নিউ নোভেল্লা ” নামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। আঠারোশো আশির দশকে কোরিয়ায় অবস্থিত প্রেসবিটারিয়ান ও রোমান ক্যাথলিক মিশনারী স্কুলগুলো কোরিয়ান শিশুদের খুংমুন বর্ণমালা শেখাতে শুরু করে ( কারন আমেরিকান ও ইউরোপীয়দের জন্য হাঞ্জার চেয়ে খুংমুন শেখা সহজ ছিল)।

উনিশশো সালের দিকে জাপানীরা কোরিয়া দখলের পর কোরিয়ান সংস্কৃতি ধ্বংসের লক্ষ্যে প্রথমেই খুংমুন ভাষার ব্যবহারে আইনগত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে এ অপচেষ্টা হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সর্বস্তরের কোরিয়ানরা নতুন উদ্যমে খুংমুন ব্যবহার শুরু করে, নিজেদের বর্ণমালা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয় গোটা জাতি।

ধীরে ধীরে কোরিয়ান ভাষা ও খুংমুন বর্ণমালা কোরিয়ার প্রধান সাহিত্যিক ভাষা হয়ে উঠলে এর প্রমিতকরণের দাবী জোরালো হতে থাকে। ১৯৩৩ সালে কোরিয়ান ল্যাংগুয়েজ সোসাইটি নিজ উদ্যোগে কোরিয়ান ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়। প্রমিত লিপির নাম দেয়া হল হাংগুল (কোরিয়ান লিপি)। হাংগুল জাপানী ঔপনিবেশিক সরকারের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোরিয়ানদের শক্ত হাতিয়ার হয়ে উঠলো। পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন, বাইবেলসহ সব ধরনের দৈনন্দিন লেখালেখি চলতে লাগলো হাংগুল বর্ণমালায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ নাগাদ হাঞ্জাকে বই-পুস্তকে মলাটবন্দী করে হাংগুল হয়ে ওঠে কোরিয়ান ভাষার সার্বজনীন লেখ্যরূপ।

আধুনিক কোরিয়ান ভাষার কথ্য ও লেখ্যরূপ: কোরিয়ান ভাষার আধুনিক যুগের শুরু স্বাধীনতা ও কোরিয়া যুদ্ধের পর থেকে। কোরিয়া ভাগের পর কোরিয়ান ভাষার দুটি প্রমিত রূপ দেখা দিতে শুরু করে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রমিত ভাষা ও উত্তর কোরিয়ার সাংস্কৃতিক ভাষা। দুটি রূপই ১৯৩৩ সালে প্রণীত ভাষারীতিকে আদর্শ হিসেবে অনুসরণ করছে এবং অদ্যবধি প্রায় একইরকম রয়ে গেছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষায় ইংরেজী ও উত্তর কোরিয়ান ভাষায় রুশ পারিভাষিক শব্দের অনুপ্রবেশ এবং ভিন্ন বাগধারার ব্যবহার কোরিয়ান ভাষার দুই রূপে কিছু সুস্পষ্ট পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে।

রাজা সেজংয়ের সরল বর্ণমালার উপর ভিত্তি করে প্রণীত হাংগুল কালের স্বাদটুকু ধরে রেখে আঞ্চলিকতার প্রভাব উপেক্ষা করে দীর্ঘ ৬০০ বছর স্বকীয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে এবং শতকরা ৯৮ ভাগেরও বেশী স্বাক্ষরতার হার নিয়ে কোরিয়ান জাতিকে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে শিক্ষিত জাতিগুলোর একটি হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। অসংখ্য ভাষাবিদের মতে, হাংগুল বর্ণমালা পৃথিবীর সবচেয়ে নিখুঁত ও সহজবোধ্য বর্ণমালা।

আধুনিক হাংগুল বর্ণমালায় ২৪ টি একক বর্ণ রয়েছে। তবে স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণের সমন্বয়ে কিছু যুক্তবর্ণ রয়েছে যেগুলোসহ হাংগুল বর্ণমালায় মোট বর্ণ ৪০ টি (১৪টি ব্যঞ্জনবর্ণ, ১০ টি স্বরবর্ণ, ৫ টি দ্বিব্যঞ্জন ও ১১ টি দ্বিস্বর বর্ণ)।

দক্ষিণ কোরিয়ান বনাম উত্তর কোরিয়ান: হাংগুলের কিছু সীমাবদ্ধতা এবং হাঞ্জার কিছু ইতিবাচক দিক বিবেচনা করে দক্ষিণ কোরিয়ানরা বর্তমানে লেখ্য ভাষায় হাংগুল ও হাঞ্জার একটি সমন্বিত সংস্করণ ব্যবহার করছে। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ১,৮০০ হাঞ্জা বর্ণমালার একটি তালিকা তৈরি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে। তবে হাঞ্জা এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় নিতান্তই পাঠ্যপুস্তকের একটি বিষয়ের বেশী কিছু নয়।

উত্তর কোরিয়া হাঞ্জাকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন জ্ঞান করে একে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে উত্তর কোরিয়ান প্রকাশনাসমূহ থেকে এই লিপি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া সরকার কোরিয়ান ভাষার বিশুদ্ধতা রক্ষায় যতটা সম্ভব পারিভাষিক শব্দ বর্জনেরও উদ্যোগ নিয়েছে। কিছু নির্ভেজাল কোরিয়ান শব্দ প্রচলনেরও চেষ্টা চলছে। বাচ্চাদের চীনা নাম না রেখে কোরিয়ান নাম রাখতে অভিভাভকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়া সরকারের এসব উদ্যোগ সফলতা লাভ করলে কোরিয়ান ভাষার আধুনিক ইতিহাসে নিঃসন্দেহে একটি ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হবে।

বিশ্বায়ন: প্রায় আট কোটি মানুষের মুখের ভাষা হওয়া সত্ত্বেও কোরিয়ান ভাষা কোরিয়ার বাইরে এখনও পর্যন্ত তেমন একটা প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হয় নি। বিদেশীদের জন্য যেসব ভাষা শেখা সবচেয়ে কঠিন বলে বিবেচনা করা হয় সেগুলোর মধ্যেও এটি অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোরিয়ান ভাষাকে আরবি ও জাপানীর সাথে “ক্যাটাগরি ফোর”-এর অন্তর্ভুক্ত করেছে অর্থাৎ একজন ভিন্নভাষীর কোরিয়ান ভাষায় কাজ করার মতো সাবলীলতা অর্জন করতে ন্যূনতম ৬৩ সপ্তাহ প্রয়োজন।

তবে পড়াশুনা ও কাজের জন্য কোরিয়ায় আসা বিদেশীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে কোরিয়ান ভাষা শেখার চাহিদা ও আগ্রহ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়া ও ইউরোপের অনেক দেশে কোরিয়ান টিভি নাটক, গান ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরিয়ান ভাষার জনপ্রিয়তাও দিনদিন বাড়ছে। কোরিয়ায় পর্যটকের সংখ্যাটাও এখন বছর শেষে কোটি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। হালের সেনসেশন কোরিয়ান পপ তারকা সাই বিশ্ববাসীর কাছে ভাষাটিকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। সব মিলিয়ে কোরিয়ান ভাষার নতুন যুগ হয়তো শুরু হল বলে!