দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হিকে ঘুষ গ্রহণ ও শেয়ার কারসাজিসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বুধবার (৬ আগস্ট) জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির প্রসিকিউটররা। সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, দেশটির বিশেষ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কিম কিওন হির স্বামী, দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল, বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। গত ডিসেম্বরে বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত সংসদ কর্তৃক তার বিরুদ্ধে আনা তদন্ত বিলগুলো ভেটো দেওয়ার এক সপ্তাহ পর তিনি সামরিক আইন জারি করেন। এর ফলে সাময়িকভাবে বেসামরিক শাসন স্থগিত হয়ে যায় এবং পরে সংসদ কর্তৃক তিনি পদচ্যুত হন।
জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রসিকিউটররা কিম কিওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি এই পরোয়ানা মঞ্জুর হয়, তাহলে এটি হবে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যেখানে একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তার স্ত্রী উভয়েই আইনের মুখোমুখি হবেন।
কিম কিওনের বিরুদ্ধে ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে একটি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ রয়েছে। সেইসঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী আইন লঙ্ঘন করে ২,২০০ ডলার মূল্যের ডিওর হ্যান্ডব্যাগসহ বিলাসবহুল উপহার গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জিজ্ঞাসাবাদের আগে কিম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি একজন অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তি হয়েও যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছি, তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
এই ঘটনা স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক মনোযোগ কাড়ে। কিম প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তার গাড়ির পিছু পিছু স্থানীয় সাংবাদিকরা চলতে থাকেন। কার্যালয়ের বাইরে কিম ও ইউনের সমর্থকেরা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে ও ‘তদন্তে ন্যায্যতা নিশ্চিত করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন।
৫২ বছর বয়সী কিম কিওন হিকে ঘিরে শেয়ার কারসাজি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ বহুদিন ধরেই বিতর্কের বিষয়। ২০২২ সালে একটি ভিডিওতে তাকে একজন ভক্তের কাছ থেকে বিলাসবহুল হ্যান্ডব্যাগ নিতে দেখা যায়, যা সমাজে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করে ইউনের দলের এমপিদের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগও রয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন তিনটি বিশেষ তদন্ত বিল ভেটো করেছিলেন, যার সর্বশেষটি ছিল নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। এর পরপরই তিনি সামরিক আইন জারি করেন, যা বর্তমানে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে।




































