র্যাব বলছে, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার অন্যতম সন্দেহভাজন শফিউর রহমান ফারাবী হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুপুরে উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে মুফতি মাহমুদ জানান, অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায় ফারাবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে ফারাবী নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ফারাবীকে থানায় সোপর্দ এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান মুফতি মাহমুদ।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র ফারাবী পড়াশোনা শেষ করেননি। ২০১০ সালে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরে যোগ দেন তিনি। সে বছরই নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে ১ মাস কারাগারে ছিলেন ফারাবী। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে অনলাইনে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানোর কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর ২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হলেও পরবর্তীতে জামিনে ছাড়া পায় ফারাবী।
মুফতি মাহমুদ বলেন, বছর পাঁচেক আগে অনলাইনে অভিজিতের সঙ্গে ফারাবীর পরিচয়। কিন্তু লেখালেখি নিয়ে মতবিরোধের এক পর্যায়ে তাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অনলাইনে অভিজিৎ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে উস্কানিমূলক পোস্ট দিত ফারাবী। বিভিন্ন সময়ে সে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দেওয়া ছাড়াও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ব্লগে অভিজিৎকে হত্যার বিষয়ে প্রচারণা চালাতো।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় খুন হন অভিজিৎ। এ সময় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন।
অভিজিতের ঘনিষ্ঠজনদের অভিযোগ, লেখালেখি করার কারণে তাকে বিভিন্ন সময় ব্লগ ও ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে শফিউর রহমান ফারাবীও ছিলেন।
ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ছাড়াও আরও কয়েকটি সন্দেহকে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। আনসার বাংলা সেভেন নামের এক টুইটার একাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে, ব্লগার অভিজিৎ রায়কে তার ‘ইসলাম বিরোধী অপরাধের’ জন্য হত্যা করা হয়েছে। তবে এর মাধ্যমে কেউ প্রকৃত ঘটনা আড়ালের চেষ্টা করছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।