আশির দশকের গণতন্ত্র হত্যাকারী পতিত স্বৈরাচার ও ’৭২-’৭৫ সময়ের সন্ত্রাসীরা একজোট হয়ে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ধ্বংসের খেলায় মেতেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার দেয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সব দলের মিলিত ইচ্ছায় যে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা বর্তমান সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছে। বিনা ভোটের এ সরকার সংবিধানে বর্ণিত জনগণের মৌলিক অধিকার সম্পূর্ণভাবে হরণ করেছে। দেশে আজ গণতন্ত্রের বিন্দুমাত্র চিহ্ন নেই, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। যে স্বপ্ন নিয়ে এদেশের মানুষ ’৯০ সালে স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছিল, সেই স্বপ্ন আজ কর্তৃত্ববাদী সরকার তছনছ করে দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনার সাথে বেঈমানী করছে।
’৯০-এর চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠার নতুন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বেগম জিয়া।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ৬ ডিসেম্বর জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এ দিনে দীর্ঘ নয় বছরের সামরিক ও অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে এক সফল আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিলো তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের। যে বহুদলীয় রাজনীতির পূণঃপ্রবর্তন করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তার ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ণ করে ক্ষমতালিপ্সু স্বৈরাচারী এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশকে রুদ্ধ করেছিল। কিন্তু ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে স্বৈরাচারকে পরাজিত করার এ দিনে শৃঙ্খলিত গণতন্ত্র মুক্ত হয়েছিলো আমাদের দেশে।
’৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন বেগম খালেদা জিয়া ।
তিনি বলেন, অসংখ্য শহীদের রক্তস্নাত অর্জিত গণতন্ত্র এখন আবারো সঙ্কটের মুখে। বিনা ভোটের কর্তৃত্ববাদী সরকারের একদলীয় শাসনের চরিত্রগুলো ক্রমেই প্রকাশ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে বর্তমান শাসক গোষ্ঠির ফ্যাসিবাদী আচরণে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে একতরফা নির্বাচন করে আবারও সারা জাতিকে একদলীয় নিষ্ঠুর শাসনের শৃঙ্খলে বন্দী করে মানুষের সব মৌলিক –মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছে।
অপর এক বানীতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের গণতন্ত্র এখন নামে বেনামে একদলীয় ফ্যাসিবাদের থাবায় বিপর্যস্ত। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী ও নিরংকুশ করার জন্য আজ ক্ষমতাসীনেরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে ফেলার খেলায় মত্ত। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আবার বন্দী গণতন্ত্রকে পূণ:রুদ্ধার করার সংগ্রামে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।