Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বোরকা ছেড়ে পশ্চিমা পোশাকে সৌদি নারী

saudi-womenরক্ষণশীল সৌদিতে নারীদের বোরকা ছাড়া রাস্তায় নামতে খুব একটা দেখা যায় না। কোনও নারী ভুল করে এমন দুঃসাহস দেখালেও তাকে শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি সৌদির কঠোর নিয়মকে তোয়াক্কা না করে পশ্চিমা পোশাকে রাস্তায় নামতে দেখা গেল এক নারীকে।

হাই হিলের শব্দে সবার দৃষ্টি পড়ছিল। তার ওপর আবার পশ্চিমা পোশাক পরায় সবার দৃষ্টি ঘুরেফিরে তার দিকেই যাচ্ছিল। যাবেই বা না কেন? সৌদিতে এমন ঘটনাতো রোজ দেখা যায় না।

chardike-ad

কমলা রঙের ব্লেজারে অনন্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি। খোলা বাদামি চুলে কোনো রকম সংকোচ ছাড়াই হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন রিয়াদের একটি মলে। তবে তিনি কোনও সেলিব্রেটি নন। তরুণীর এমন পোশাক সৌদিতে বিপ্লব হিসেবেই দেখা হচ্ছে। পর্দানসীন সৌদি নারীদের মাঝে একেবারেই স্বাধীনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করলেন ৩৩ বছর বয়সী মশিল আল জালোদ। সাদা-কালোর বোরকা আর হিজাবের জায়গায় তিনি একেবারে রঙিন, পশ্চিমী পোশাকের ছোঁয়া এনে দিলেন।

জালোদ পেশায় মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মকর্তা। সম্প্রতি তিনি নারী স্বাধীনতা নিয়ে নিজের মতো করে আন্দোলনে নেমেছেন। হিজাব, বোরকা ছেড়ে শার্ট, ট্রাউজারেই তিনি রিয়াদের রাস্তায় নামছেন, অফিসে যাচ্ছেন।

saudi-womenআপাদমস্তক হিজাব পরিহিতা নারীদের মাঝে তিনি একেবারেই ব্যতিক্রম। তাই রাস্তায় বের হলেই সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু থাকেন তিনি। অনেকেই আবার ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি মডেল? নাকি বিখ্যাত কেউ? নির্মল হাসিতে জালোদ উত্তর দেন, না, আমি সাধারণ সৌদি নারী। কিন্তু আমি স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। কোনও নিষেধাজ্ঞা ছাড়া। আমি কী পরব না পরব, তা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। তবে এভাবে চলার জন্য তাকে একাধিকবার হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে যাননি জালোদ।

তাকে দেখে অনেক সৌদি নারীই আগ্রহ দেখাচ্ছেন খোলামেলা পোশাকে। তার মতো হয়ত এতটা আধুনিক পোশাক পরছেন না কেউ। তবে অন্যরকম পোশাকেও বেরুচ্ছেন অনেকেই। সেসব ছবি আবার সাহস করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও করছেন। শুধু কি তাই? রূপচর্চাতেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সৌদি নারীদের জীবনে। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পার্লারে যাতায়াতও বেড়েছে অনেক।

এতদিনের চাপিয়ে দেওয়া নিয়মের শেকল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছে কট্টরপন্থি সৌদি। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান নিজেও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নারীদের হিজাব, বোরকা আর বাধ্যতামূলক রাখা হবে না। এমন আশ্বাসেই অনেক নারীরাই নিজেদের পাল্টে ফেলছেন। এভাবেই পোশাক বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের জীবনযাত্রা পাল্টে ফেলতে চাইছে সৌদির নারীরা।