'নাতনিটা আজ বাড়ি আসবে বলছিলো, আমি এখন তার জন্য কবর খুঁড়ি'

 

chardike-ad

“আমার নাতনিটা আজ বাড়ি আসবে বলছিলো। কিন্তু সে যে লাশ হয়ে আসবো তা তো বুঝি নাই। আমি এখন তার জন্য কবর খুঁড়ি,” গণমাধ্যমকে বলছিলেন নিজ এলাকায় ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ঢাকায় এসে আত্মহননের পথ বেছে নেয়া পটুয়াখালীর কলেজছাত্রীর দাদা আব্দুস সোবহান।

ওই ছাত্রীর বাবার কবরের পাশেই তার জন্য আজ কবর খুঁড়েছেন তার দাদা নিজেই। তিনি বলছিলেন “গতকাল সকালেও নাতনির সাথে কথা হলো। ভাবছিলাম ছেলে গেছে, নাতনি তো আছে। সেও চলে গেলো”।

এই কলেজছাত্রীর বাবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯শে জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন।

শনিবার ওই কলেজছাত্রীর আত্মহননের ঘণ্টাখানেক আগেই তাদের বাসায় গিয়ে কথা বলেছিলেন জুলাই ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তি।

“মেয়েটি খুব কম কথা বলছিলো। হঠাৎ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, কাঁদল। বললো-আল্লাহ যা করে,সেটা নাকি ভালোর জন্যেই করে। আমার কি ভালো করসে বলতে পারেন? আমার সাথে খালি খারাপ ই হইসে!” গণমাধ্যমকে বলছিলেন তিনি।

ওই কলেজছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বাবার কবর জেয়ারত করে নানীর বাড়ি যাওয়ার সময় ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনাই ওই ছাত্রীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন তারা। তবে ওই ঘটনার পর গ্রামের লোকজনের নানা কথা, ফিসফাস কিংবা নানা প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে মানসিকভাবে সে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলো বলেই তাদের ধারণা।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখলা সরকার বলছেন, ধর্ষণ শুধু একটি শারীরিক আঘাত নয়, এটা বড় মানসিক আঘাত। মানুষ যখন বিশেষ মানসিক অবস্থায় পড়ে যায় তখন আত্মহননের দিকে ঠেলে দেয়।

“এ ধরনের ক্ষেত্রে ভিকটিমের মানুষের প্রতি অবিশ্বাস ও ভয় তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা তৈরি হয়। অন্যরা তাকে বারবার প্রশ্ন করলে সেটি তাকে ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দিতে পারে”, গণমাধ্যমকে বলছিলেন তিনি।